ইলমে গায়েব
এই একটি বিষয় নিয়ে আমাদের মুসলিমদের মধ্যে যথেষ্ট মতভেদ আছে। "ইলমে গায়েব "বা অদৃশ্যের জ্ঞানের অধিকারী কারা কারা সে বিষয়ে বিস্তর মতপার্থক্য রয়েছে। আমি আমার নিজস্ব জ্ঞান দিয়ে নিজেই বুঝার চেষ্টা করছি আসলেই এর সঠিক উত্তর কী? আর যেটুকু বুঝতে অসমর্থিত হয়েছি তা আপনাদের কাছ থেকে জানতে চাই।
ইলমঃ "ইলম" অর্থ জ্ঞান। জ্ঞান অর্থ জানা। যার বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানা আছে তিনি জ্ঞানী।
গায়েবঃ "গায়েব" অর্থ অদৃশ্য। অদৃশ্য মানে যা দেখা যায় না। এখানে দেখা যায় না মানে সবাই দেখবে না বা জানবে না। তবে কেউ না কেউ দেখবে যা সবার অগোচরে রয়েছে। এটাই হচ্ছে গায়েব।
ইলমে গায়েবঃ সুতরাং "ইলমে গায়েবের" অর্থ দাঁড়ায়, বিভিন্ন বিষয় বা সব বিষয়ে এমন জ্ঞান বা জানাশোনা আছে যা বর্তমানে সবার অগোচরে রয়েছে কিন্তু তা যা আগে ঘটেছিল, বর্তমানে ঘটে চলেছে এবং ভবিষ্যতে ঘটবে। এটাই হচ্ছে ইলমে গায়েব।
আশাকরি এই পর্যন্ত কারো দ্বিমত থাকার কথা নয়। এখন কথা হচ্ছে এই বিশেষণ বা গুণ আপনি যাকে দিবেন বা যার আছে বলে মনে করবেন তিনিই "ইলমে গায়েবের" অধিকারী। এটা যদি একমাত্র আল্লাহর হয় তাহলে তিনিই সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সর্বজ্ঞানী। যদি বলেন এই গুণ আমাদের রাসুল (সাঃ) এর আছে তাহলে তিনিও সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সর্বজ্ঞানী। এখন কথা হচ্ছে (১) দুজনই (আল্লাহ্ এবং রাসুল সাঃ) সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সর্বজ্ঞানী একসাথে হতে পারবেন কিনা? সর্ব অর্থ হচ্ছে সবার থেকে উপরে। তাহলে দুজনের মধ্যেও কেউ না কেউ কারো উপরে আছেন। যদি এটা না মানেন তবে আরো অনেকে তাঁদের সমান হওয়ার সুযোগ থাকে। (২) পৃথিবীতে কেউ তাঁদের সমান আছে?
তাহলে কখনোই দুজন একসাথে একই বিষয়ে সর্বশ্রেষ্ঠ হতে পারেন না। যদি মনে করেন দুজনই সমান। তাহলে এটা (৩) আল্লাহর সাথে শির্ক করা হবে না কেন? যেহেতু সূরা ইখলাস থেকে জানতে পারি আল্লাহর সমতুল্য কেউ নেই।
সুতরাং এখানে বিতর্কের কিছুই নেই। আমরা যদি বিষয়টা গভীরভাবে খেয়াল করি তাহলে খুবই স্পষ্ট হয়ে উঠবে। যেহেতু আল্লাহ্ ই আমাদের স্রষ্টা সেহেতু তাঁর কোনো কিছুর সাথেই পৃথিবীর কারো তুলনা করা যাবে না। কারণ পৃথিবীর সবকিছুই তাঁর সৃষ্টি।
এখন যদি বলি রাসুল (সাঃ)ও ইলমে গায়েবের অধিকারী ততটুকু যতটুকু তাঁর স্রষ্টা তাঁকে দিয়েছেন। (৪)এই কথা মানলে রাসুল (সাঃ) কে কতটুকু ছোট করা হয়? কারণ স্রষ্টা থেকে জ্ঞান নিজে নিজে (তাঁর অনুমতি ব্যতীত) নেওয়া যায় না। বরং তিনি দিলেই (যতটুকু দিবেন) অর্জন করা যাবে। যদি বলেন স্রষ্টার অনুমতি ছাড়াও তাঁর জ্ঞান নেওয়া যাবে।(৫) তাহলে সৃষ্টি আর স্রষ্টার মধ্যে পার্থক্য থাকলো কি?
সুতরাং আমার মতে ইলমে গায়েব নিয়ে অনর্থক দলাদলি না করে বরং ঐক্যবদ্ধ থাকা উচিত আমাদের। স্রষ্টা তাঁর সৃষ্ট বন্ধুকে যতটুকু দিয়ে খুশি করতে চান করুন। তবে যেহেতু আল্লাহ্ স্রষ্টা সেহেতু তাঁর সাথে কারো তুলনা হবেনা। এটা আল্লাহ্ ই আমাদের শিক্ষা দেন।
তাছাড়া আমি মনে করি এই বিষয়টা খুবই অনর্থক। তা এই জন্য যে, আল্লাহ্ আমাদের তাঁর বন্ধু মুহাম্মদ (সাঃ) কে ভালোবেসে অনুসরণ এবং অনুকরণের জন্য তাগিদ দেন। আল্লাহ্ রাসুল (সাঃ) কে পাঠিয়েছেন শির্ক মুক্ত করে আল্লাহর তাওহীদকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য। যে কাজে রাসুল (সাঃ) মনোনীত এবং প্রেরিত সেই কাজে আমাদের মন নেই। আমরা পড়ে আছি এমন সব বিষয় নিয়ে যাকে কেন্দ্র করে শয়তান আমাদের নিয়ে খেলছে।
অতএব আসুন ততটুকুই বিশ্বাস এবং স্বীকার করি যতটুকু আল্লাহ্ স্পষ্ট করেছেন এবং যতটুকু বিশ্বাসের প্রয়োজন। যদি আমি ভুল পথে থাকি তবে প্রশ্নের উত্তর গুলো দিয়ে হিদায়াতের পথে সাহায্য করুন।
আরও পড়ুনঃ
ইলমে গায়েব
https://shakawatarticle.blogspot.com/2020/04/blog-post_4.html?m=1
রাসুল(সাঃ) আল্লাহর শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি
https://shakawatarticle.blogspot.com/2020/04/blog-post_88.html?m=1
রাসুল(সাঃ) হচ্ছে নূর
https://shakawatarticle.blogspot.com/2020/04/blog-post_75.html?m=1
আরও পড়ুনঃ
ইলমে গায়েব
https://shakawatarticle.blogspot.com/2020/04/blog-post_4.html?m=1
রাসুল(সাঃ) আল্লাহর শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি
https://shakawatarticle.blogspot.com/2020/04/blog-post_88.html?m=1
রাসুল(সাঃ) হচ্ছে নূর
https://shakawatarticle.blogspot.com/2020/04/blog-post_75.html?m=1