কবর = মাজার = শির্ক
কবরঃ
মুসলমানদের মৃত্যুর পর কবর দিতে হয়। সেই কবর কীভাবে হবে তার জন্য সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা ইসলামে রয়েছে। তারপরও কবর নিয়ে বেশ মতানৈক্য রয়েছে। কিন্তু কেন পক্ষ বিপক্ষে মতামত রয়েছে? আমি আমার সাধারণ জ্ঞানে এই বিভ্রান্তির উত্তর খুঁজতে চেষ্টা করছি। আমার শিরোনাম অনেকেরই পছন্দ হবেনা। কিন্তু আমার মনে হচ্ছে এটাই বাস্তবতা। কেউ আমার বিশ্লেষণের ভুল ধরিয়ে দিলে খুবই কৃতজ্ঞ হবো।
শির্কঃ
আল্লাহকে ছাড়া অন্য কাউকে তাঁর মতো মনে করাই হচ্ছে সহজ ভাষায় শির্ক। এটা হতে পারে আল্লাহর ক্ষমতার সাথে কারো ক্ষমতা সমতুল্য হওয়া। আল্লাহর বিধানের সমতুল্য অন্য বিধান তৈরি করা। আল্লাহর প্রাপ্য ইবাদতে অন্য কাউকে সম্পৃক্ত করা ইত্যাদি। মোটকথা আল্লাহর যেসব গুণাবলী রয়েছে তা অন্য কারোর রয়েছে তা স্বীকার করলেই আল্লাহর সাথে শির্ক করা হবে। আর শির্কের পাপ হচ্ছে সবচাইতে বড় পাপ। যা তাওবা ছাড়া কখনোই মাফ হবেনা। (সূরা লোকমান : ১৩)
কীভাবে শির্কের জন্ম হয়ঃ
সহীহ্ বুখারীর ৪৯২০ নং হাদীসে এসেছে
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, যে প্রতিমার পূজা নূহ্ (‘আ.)-এর কওমের মাঝে চালু ছিল, পরবর্তী সময়ে আরবদের মাঝেও তার পূজা প্রচলিত হয়েছিল। নূহ (‘আ.)-এর সম্প্রদায়ের কতিপয় নেক লোকের নাম নাস্র ছিল। তারা মারা গেলে, শয়তান তাদের কওমের লোকদের অন্তরে এ কথা ঢেলে দিল যে, তারা যেখানে বসে মাজলিস করত, সেখানে তোমরা কতিপয় মূর্তি স্থাপন কর এবং ঐ সমস্ত পুণ্যবান লোকের নামেই এগুলোর নামকরণ কর। কাজেই তারা তাই করল, কিন্তু তখনও ঐ সব মূর্তির পূজা করা হত না। তবে মূর্তি স্থাপনকারী লোকগুলো মারা গেলে এবং মূর্তিগুলোর ব্যাপারে সত্যিকারের জ্ঞান বিলুপ্ত হলে লোকজন তাদের পূজা আরম্ভ করে দেয়। (সংক্ষেপিত)
এই হাদীস দ্বারা সুস্পষ্ট ভাবে বুঝা যাচ্ছে কীভাবে আলেম ওলামা পীর আউলিয়া ইত্যাদির মৃত্যুর পর শয়তান তাদের নামে পরবর্তী প্রজন্মকে শির্ক লিপ্ত করিয়েছে। শির্ক একদিনে পৃথিবীতে সৃষ্টি হয়নি। খুব ধীরে ধীরে এবং কৌশলে শয়তানের ফাঁদে পা দিয়ে মানুষ শির্কে জড়িয়ে পড়েছে।
মক্কার মুশরিকদের আকিদাঃ
আরবের যারা মুশরিক ছিলো তারাও এক আল্লাহকে বিশ্বাস করতো। সৃষ্টিকর্তা, রিজিকদাতা এবং রব হিসাবে পরিপূর্ণভাবে একমাত্র আল্লাহকে মানতো।(সূরা তবুও তারা মুশরিক কেন? তার কারণ তারা আল্লাহর পাশাপাশি মূর্তিকেও পূজা করে মুশরিক হয়েছে। তাদের বিশ্বাস ছিলো আল্লাহ সবকিছুরই মালিক। কিন্তু আমরা সরাসরি আল্লাহর জন্য কিছু করতে পারবেনা। এবং তাঁর কাছে পৌঁছেতেও পারবেনা। তাঁর কাছে কিছু পৌঁছাতে হলে, তাঁর সন্তুষ্টি লাভ করতে হলে এইসব মূর্তিকে সন্তুষ্ট করতে হবে। যাঁরা ছিলো আল্লাহর প্রিয় বান্দা। আরবের যেসব মূর্তির পূজা হতো তাঁরা প্রত্যেকই ছিলো আল্লাহর প্রিয় বান্দা অর্থাৎ অলি আউলিয়া। আরবের মুশরিকরা তাদের পূজায় লিপ্ত ছিলো আল্লাহর সন্তুষ্টি পাওয়ার জন্য। সুতরাং আল্লাহর বান্দাদের মাধ্যমেই আল্লাহর বিরুদ্ধে শির্ক করিয়েছে শয়তান। ( বিস্তারিত জানতে আবু জাহেলের ইসলাম এবং আমরা https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=103927771335393&id=103754624686041)
কবর যিয়ারত নিষিদ্ধ কেন ছিলো?
ইসলামের প্রথম যুগে মুসমানদের কবর যিয়ারত নিষিদ্ধ ছিলো। ( সহীহ্ মুসলিম : ২১৫০,২১৫১) পরবর্তীতে আল্লাহর রাসুল (সাঃ) কবর যিয়ারতের অনুমতি প্রদান করেন তাও শর্তসাপেক্ষে। কবর যিয়ারত করা যাবে কারণ তা মানুষকে পরকালের কথা মনে করিয়ে দেয়। সহীহ্ মুসলিম ৫২২৪,২৩০৫, আবু দাউদ ৩২৩৫।, নাসাঈ ২০৩২। কিন্তু ইসলামের প্রথম দিকে কেন কবর যিয়ারত নিষিদ্ধ ছিলো? তার কারণ ছিলো পূর্ববর্তী লোকেরা কবরের ধারে-পাশে এবং মৃতদেরকে নিয়েই শির্ক ও মূর্তিপূজা শুরু করেছিল। তাই ইসলামেও সেই আশঙ্কা থেকে কবর যিয়ারত প্রথম দিকে বন্ধ ছিল। যখন মানুষের মধ্যে শির্কের সঠিক জ্ঞান আসল তখন রাসুল( সাঃ) এর অনুমতি দান করেন। এই হাদীস থেকে প্রমাণিত কবর দিয়ে শির্কের উৎপত্তি হয়। সুতরাং কবর এবং শির্ক একটি আরেকটির সাথে সম্পর্কিত।
কবর উঁচু পাকা চুনকাম এবং স্থাপনাঃ
স্পষ্ট হাদীস দ্বারা প্রমাণিত রাসুল (সাঃ) কবরকে পাকা, চুনকাম এবং এর উপর স্থাপনা করতে নিষেধ করেছেন।( মুসলিম ৯৭০,২১৩৭, তিরমিযী ১০৫২, নাসায়ী ২০২৭, ২০২৮, ২০২৯, আবূ দাঊদ ৩২২৫, ইবনু মাজাহ ২৫৬২, ১৫৬৩, আহমাদ ১৩৭২৫, ১৪২২২৭, ১৪২২৭ হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস) যদিও একদল বলে যে, স্থাপনা নয় কবরের উপর ঘর করতে নিষেধ করেছেন। আমার প্রশ্ন হচ্ছে বেনা শব্দ যদি বসবাস করার ঘর হয়। তাহলে কি তৎকালীন আরব দেশে মানুষের কি থাকার জায়গার এতোই অভাব ছিলো যে, তারা জায়গার অভাবে কবরে ঘর বাঁধতে পারে? এটা মেনে নিলেও কবর পাকা এবং চুনকাম করার বিষয়ে কী ব্যাখ্যা আছে?
কবরকে সমতল করার নির্দেশঃ
প্রসিদ্ধ হাদীসে এসেছে রাসুল (সাঃ) যেকোনো কবরকে সমতল করতে , মূর্তিকে এবং প্রতিমার চিত্রকে ধ্বংস করতে কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন।( সহীহ্ মুসলিম জানাযা : ২১৩২,২১৩৬, তিরমিযী :১০৪৯, আবু দাউদ ৩২১৮,৩২১৯) যারা কবরকে পাকা করার পক্ষে আছেন তাদের যুক্তি হলো এই নির্দেশ মুশরিকদের কবরকে লক্ষ্য করে দেওয়া হয়েছিল।(কিন্তু আরও অসংখ্য হাদীস দ্বারা বিষয়টি প্রত্যাখ্যাত) যদি ধরেও নিই এই কবর মুরিকদের ছিলো, কিন্তু তাদের কবরও কেন সমতল করা হবে? তার কারণ তারা ঐসব কবরকে উপজীব্য করেই শির্কে লিপ্ত ছিলো। তার স্বপক্ষে প্রমাণ হচ্ছে হাদিসের বাকি অংশ যেখানে বলা হচ্ছে মূর্তি এবং ছবি থাকলে তা ধ্বংস করতে বলা হচ্ছে। মূর্তি এবং ছবি হচ্ছে শির্কের আশ্রয়স্থল। তাই এগুলো ধ্বংস করতে হবে। ঠিক তদ্রুপ ভাবে কবরকে সমতল করতে হবে কারণ কবরকে উপজীব্য করেও শির্কের সূচনা হয়েছে এবং হবে। তাই যেকোনো করবই এর আওতায় পড়বে। সেটা হোক মুশরিকের হোক মুসলিমের। কারণ মানুষ না জেনেই ধীরে ধীরে শির্কে নিযুক্ত হয়ে যাবে সেটা রাসুল (সাঃ) জানেন। আর আজও যদি কবরকে পাকা করে মাজারে রুপান্তর করে শির্কের কার্যক্রম চলে তাহলে তাও এই হাদিসের আওতাধীন। কেননা এর মূল শিক্ষা হচ্ছে শির্কের মূলৎপাটন করা। এখন যদি কেউ বলে কবরকে সমতল করার কথা মুসলমানের নয় তাহলে সে হাদিসের ভুল ব্যাখ্যায় আছে। এর কারণ হাদিসের প্রধান উদ্দেশ্য শির্ক নির্মূল।
কবরকে সালাত সিজদার জায়গা না বানানোঃ
রাসুলের (সাঃ) প্রসিদ্ধ হাদীসে এসেছে, তিনি সুস্পষ্টভাবে এবং কঠোরভাবে কবরকে সালাতের জায়গা না করতে এবং তাকে সিজদার স্থান না বানাতে নিষেধ করেছেন। (বুখারী ৪৪৪১,৪৪৪৩, ৪৪৪৪,) এতে পরিষ্কার যে কবরকে কেন্দ্র করে সালাতের স্থান এবং তাকে সিজদা করা যাবে না। বর্তমানে যারা কবরকে মাজার করার পক্ষপাতী তাদের মাজার গুলো প্রতিটিই হচ্ছে সালাতের জায়গা এবং প্রকাশ্যে সিজদায় লিপ্ত। যে আশঙ্কা থেকে রাসুল (সাঃ) কবরকে সিজদার জায়গা করতে নিষেধ করেছিলেন সেই আশঙ্কাই আজ সত্যি করছে একদল মানুষ। তাহলে এরা সুস্পষ্ট রাসুলের (সাঃ) নির্দেশ বিরোধী।
ইহুদী খ্রিস্টানদের প্রতি আল্লাহর লানতঃ
রাসুল (সাঃ) মৃত্যুর মুখোমুখি অবস্থায়ও ইহুদী খ্রিস্টানদের প্রতি আল্লাহর লানতের কথা জানিয়ে গেছেন। ( বুখারী ৪৪৪১,৪৪৪৩, ৪৪৪৪,) তার কারণ তারা তাদের নবী রাসুলদের (আঃ) কবরকে সিজদার জায়গায় রুপান্তরিত করেছিল। সুতরাং কবরকে সিজদার জায়গা করা খুবই গর্হিত কাজ। এটা এমন কাজ যা দ্বারা আল্লাহর লানতের স্বীকার হতে হবে। আজ আমাদের একদল আলেম জেনেশুনে এই কাজটিই প্রতিনিয়ত করাচ্ছে।
কবরে কারুকার্য না করাঃ
হাদীস এসেছে কবরে কারুকার্য করা খুবই নিকৃষ্ট একটি কাজ। ( সহীহ্ বুখারী ১৩৪১) ইহুদী খ্রিস্টানরা তাদের কবরকে কারুকার্যে ফুটিয়ে তুলতো। যা আল্লাহর কাছে নিকৃষ্ট। আজ আমাদের দেশে এইসব কাজই হচ্ছে নির্দিধায়। এইসব করার পরও কীভাবে তারা নিজেদের মুসলিম দাবি করে।
কবরকে ঘিরে উৎসব না করাঃ
সহীহ্ দ্বারা প্রমাণিত যে রাসুল (সাঃ) তাঁর করবে ঘিরে উৎসব পালন করতে সম্পূর্ণ নিষেধ করেছেন। কেননা এর থেকে ধীরে ধীরে শির্কের জন্ম নিবে। সুতরাং কোনো কবরকে ঘিরে কখনোই উৎসব করা যাবে না। এটা ইসলামে নিষিদ্ধ। কিন্তু এই নিষিদ্ধ কাজই দেদারসে চলছে আমাদের দেশে বার্ষিক ওরসের নামে । যারা কবরকে মাজারে করার পক্ষপাতী তারা কয়টি নিষিদ্ধ কাজে জড়িত আপনারা নিজেরাই যাচাই করে দেখুন।(হাদিস সম্ভার হক ও অধিকার অধ্যায় ১৬৯৬ ১৬৯৮, আবূ দাঊদ ২০৪২, ২০৪৪ নং, বিশুদ্ধ সূত্রে, সহীহুল জামে’ ৭২২৬ নং, মিশকাতুল মাসাবিহ পর্ব-৪ঃ সলাত ৯২৬,রিয়াদুস সলেহিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর দরূদ ও সালাম প্রসঙ্গে ১৪০৯, মুসনাদে আহমাদ ৭৭৬২, ৮২৩৮, ৮৫৮৬, ৮৬৯৮, ৮৮০৯ নং হাদীস।)
সাধারণ কবর ও আউলিয়ার কবরের পার্থক্যঃ
যারা আউলিয়াদের মাজারের পক্ষপাতী তাদের যুক্তি হলো (কোনো সহীহ্ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত নয়) যেহেতু এইসব আল্লাহর অলি আল্লাহর নিদর্শন সেহেতু তাদের সম্মানে কবরকে মাজার করা হচ্ছে। তাদের উদ্দেশ্যে নয়, আপনাদের উদ্দেশ্যে বলি এই সম্মান দেখানো থেকেই তো শির্কের সৃষ্টি হয়েছিল। একজন সাধারণ মানুষের কবরকে কেউ অতিরিক্ত সম্মান কখনোই দিবে না। কিন্তু একজন আল্লাহর অলিকে সম্মান করতে গিয়ে একসময় আল্লাহর সাথে শির্কের পর্যায়ে চলে যাবে এবং তা হচ্ছেও। এই বিষয়গুলো আল্লাহ এবং আল্লাহর রাসুল (সাঃ) ভালো করেই জানতেন বলে কবরকে ঘিরে অনেক সতর্কীকরণ করে গেছেন। এই কবরকে ঘিরেই যে তাঁর উম্মত শির্কে লিপ্ত হবেন সেটা রাসুল (সাঃ) জানতেন। তাই তিনি মৃত্যুর আগ মুহুর্ত পর্যন্ত এই কবর নিয়েই সতর্ক করে গেছেন। এরপরও যদি আল্লাহ আপনাদের হিদায়াত না দেন তাহলে আল্লাহর কাছে হিদায়াতের দোয়া করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।
মূর্তি এবং মাজার যেখানে একঃ
মূর্তি দিয়েই যে শির্কের সূচনা তা আমরা জানি। এবং আমাদের ধারণা শুধুমাত্র মূর্তি দিয়েই বোধহয় শির্ক হয়। কিন্তু সেটা সম্পূর্ণ ভুল। কারণ মূর্তি দিয়ে যে কাজ হয় সেই একই কাজ যদি মাজার দিয়ে হয় তাহলে এর পার্থক্য কোথায়? এই লেখায় আমি উল্লেখ করেছি কীভাবে নূহ (আঃ) লোকেরা মূর্তি পূজায় জড়িয়েছিল। ঠিক একই কায়দায় আমাদের বর্তমান সমাজে কবর পূজা শুরু হয়েছে। তখনকার দিনে আল্লাহর নেককার বান্দাদের সম্মান দিতে গিয়ে তারা একসময় আল্লাহকে ভুলে গিয়ে ঐসব বান্দাদেরই ডাকতে শুরু করে। যা ছিলো শয়তানের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার একটি অংশ। আজও আমরা কোনো কিছু চাইতে হলে সরাসরি মাজারে গিয়ে আল্লাহর অলিদের কবরের কাছে চাইছি। আজ আমরা আল্লাহর কাছে নয় বরং তাঁর বান্দাদের কাছে চাইছি। যা সুস্পষ্ট ভাবে শির্কের অন্তর্ভুক্ত। এই কাজ যে শির্ক সেটাও আজ কেউ জানে না। একশ্রেণির স্বার্থবাদী মহলের কারণে আজ আমরা গোমরাহীতে লিপ্ত আছি।
আজ থেকে ৫০/৬০ বছর আগেও মাজারে সিজদা ছিলো না। যদিও এই উপমহাদেশে হিন্দুদের কারণে মাজারে সিজদার প্রথা চালু হয়েছে অনেক আগেই। পরবর্তীতে ধীরে ধীরে তা আমাদের মুসলিম সমাজে প্রবেশ করেছে। আজ এটা এমন পর্যায়ে চলে গেছে এর বিরুদ্ধে কথাই বলা যাচ্ছে না। তার কারণ কী? এর একমাত্র কারণ ইসলাম সম্পর্কে আমাদের অজ্ঞতা। আমাদের সমাজে খুব কম সংখ্যক লোকই কুরআন হাদীস জানেন। সবাই কুরআন পড়তে পারে কিন্তু কুরআনে কী আছে তা কেউ জানেনা। যদি জানত তাহলে আজ আমাদের সমাজে শির্কের আস্তানা হতো না। মূর্তি আর মাজার পূজা যে একই তা ভারতের একজন বিখ্যাত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব জহরলাল নেহেরু একবার খাজা মঈনউদ্দীন চিশতি (রহ) এর মাজার পরিদর্শনে গিয়ে দেখতে পান সবাই মাজারে সিজদা দিচ্ছে। এটা দেখে উনি মন্তব্য করলেন যে, মুসলমান আর হিন্দুদের কোনো পার্থক্য নেই। আমরা (হিন্দুরা) মূর্তিকে উপরে রেখে পূজা করি আর মুসলমানরা কবরের মধ্যে রেখে পূজা করে। আজ এটাই হচ্ছে বাস্তবতা। আপনি নিজেকে কীভাবে মুসলমান দাবি করেন হিন্দুদের মতো মাজারে পূজা করে।
সর্বশেষ কথাঃ
কবর সম্পর্কিত যত হাদীস আছে তা একসাথে করলে শুধু একটা বিষয়ই দাঁড়ায়, তা হচ্ছে শির্ক থেকে বেঁচে থাকা। আল্লাহর রাসুল (সাঃ) জানতেন যে অদূর ভবিষ্যতে এমন একদল মানুষ আসবে যারা কবরবাসী নিয়ে শির্কে লিপ্ত হবে। আর তাই তিনি এই সম্পর্কে ভবিষ্যৎ বাণীও করে গেছেন।
রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর দাস ছাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ নবী করীম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘আমি সবচেয়ে যাদের বেশি ভয় করি তারা হচ্ছে নেতা ও এক শ্রেণীর আলেম সমাজ। অচিরেই আমার উম্মতের কিছু লোক মূর্তিপূজাকরবে। আর অতি শীঘ্রই আমার উম্মতের কিছু লোক হিন্দু বা বিজাতিদের সাথে মিশে যাবে’ (ইবনে মাজাহ হা/৩৯৫২, হাদীছ ছহীহ)।
সুতরাং কবর দ্বারা যে পূজা আমাদের মুসলিম সমাজে চালু আছে তা কখনোই ইসলাম সম্মত নয়। আসুন আমরা ইসলামকে জানার চেষ্টা করি। আল্লাহ আমাদের সঠিক হিদায়াত দান করুন আমিন।
( কবর সম্পর্কিত সকল হাদীস দেখুন এখানে https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=121482969579873&id=103754624686041)