মুশরিক শব্দটি এসেছে শিরিক থেকে। আর শিরিক হলো তাওহীদের বিপরীত। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ্ তাঁর তাওহীদের এবং শির্কের বর্ণনা করেছেন বেশী। সঠিকভাবে আল্লাহ্কে চিনতে হলে প্রতিটি মুসলমানকে জানতে হবে তাওহীদ কী এবং শির্ক কী?
তাওহীদ কী?
তাওহীদ শব্দের সোজা অর্থ হলো এক, একক, অদ্বিতীয়, একত্ব। ইসলামী পরিভাষায় তাওহীদ শব্দটি যখন আল্লাহর সাথে সম্পৃক্ত হয় তখন এর অর্থ দাঁড়ায় আল্লাহ্ এক, একক এবং অদ্বিতীয় তথা তাঁর মতো দ্বিতীয় কোনো ইলাহ বা উপাস্য নেই।
সুতরাং "তাওহীদ " হলো আল্লাহর একত্ব তথা একত্ববাদ। । তিনি ছাড়া এই বিশ্ব জগতে অন্য কোনো দ্বিতীয় সৃষ্টিকর্তা, আইনপ্রণেতা, উপাস্য বা কতৃত্ববাদী কেউ নেই। তিনি ই সর্বেসর্বা একক রব।
শির্ক কী?
শির্কের অর্থ হলো অংশীদার স্থাপন করা। অর্থাৎ কোনো বিযয়ে কারো সাথে অন্য কারো শরীক সাব্যস্ত করাই হলো শির্ক। শির্ক শব্দটি যখন আল্লাহর সাথে সম্পৃক্ত হয় তখন এর অর্থ দাঁড়ায়, আল্লাহর কোনো ইবাদত বা ক্ষমতার সাথে অন্য কাউকে শরিক বা অংশীদার করা।
অর্থাৎ আল্লাহর তাওহীদ সম্বলিত যেসব গুণাবলী রয়েছে, সেইসব গুণাবলী আল্লাহরও আছে সেইসাথে অন্য কারোরও আছে এমন ধারণা বা বিশ্বাস করাটাই হচ্ছে আল্লাহর সাথে শির্ক।
মুশরিক কাকে বলেঃ
যারাই শির্ক করে তারাই হচ্ছে মুশিরক। অর্থাৎ আল্লাহর যেসব বান্দারা আল্লাহর সাথে বিভিন্নভাবে অংশীদার স্থাপন করে তাদের বলা হয় মুশরিক। সোজা কথায় যেসব ব্যক্তি আল্লাহর রুবূবিয়্যাতে তথা কাজে ও স্বত্তাগতভাবে যেমনঃ আল্লাহ্ সৃষ্টিকর্তা, রিজিকদাতা। ঠিক তেমনি অন্য কাউকে সৃষ্টিকর্তা রিজিকদাতা সাব্যস্ত করলে। অথবা আল্লাহর স্ত্রী সন্তান পুত্র কন্যা ইত্যাদি বা আল্লাহর নিজস্ব শরীর থেকে কাউকে সৃষ্টি করা হয়েছে বলে স্বীকার করলে তাকে বলা হচ্ছে মুশিরক।
তেমনিভাবে আল্লাহর উলূহিয়্যাতে তথা বান্দা আল্লাহর জন্য যেসব ইবাদত করে যেমনঃ সালাত সিয়াম সিজদা মানত কুরবানী ইত্যাদি। ঠিক তেমনিভাবে আল্লাহর পাশাপাশি অন্য কাউকে সিজদা বা তার জন্য কুরবানী মানত ইত্যাদি যে করে তাকে বলা হয় মুশরিক।
সেইসাথে কোনো বান্দা যদি আল্লাহর নাম ও গুণাবলীতে যেমনঃ আল্লাহ্ উদ্ধারকারী, সন্তান প্রদানকারী, সুখ দুঃখ প্রদানকারী ইত্যাদির সাথে অন্য কাউকে এমন উদ্ধারকারী, সন্তান প্রদানকারী বা সুখ দুঃখ দেওয়ার মালিক মনে করলে তাকে বাল হবে মুশরিক।
মোটকথা যদি কেউ এমন মনে করে আল্লাহ্ যা পারেন করেন বা করার ক্ষমতা রাখেন তা অন্য কেউ করতে পারে বলে বিশ্বাস করলেই ঐ ব্যক্তি মুশরিকে পরিনত হবে।
মুশরিকের পরিচয়ঃ
আল্লাহ্ পবিত্র কুরআনের অসংখ্য আয়াতে মুশরিকদের কথা উল্লেখ করেছেন। মুশরিকদের তিনি একমাত্র আল্লাহ্কেই ইলাহ স্বীকার করার জন্য বারবার তাগিদ দিয়েছেন। কেননা তারা আল্লাহ্কে রব হিসাবে স্বীকার করতো। কিন্তু তারা আল্লাহর পাশাপাশি আল্লাহর অন্যান্য বান্দাকেও ইলাহ হিসাবে মানতো। এখন আমরা দেখব কুরআনের আলোকে মুশরিকদের পরিচিত।
মুশরিকরা আল্লাহ্কে রব হিসাবে মানেঃ
তৎকালীন মক্কার মুশরিকরা আল্লাহ্কে তাদের রব অর্থাৎ তাদের সৃষ্টিকর্তা হিসাবে স্বীকার করতো। আল্লাহ্ পবিত্র কুরআনে বলেন,
" (হে রাসুল) তুমি যদি তাদের জিজ্ঞাসা করো, আসমান ও জমিন কে সৃষ্টি করেছেন? তবে তারা(মুশরিকরা) অবশ্যই জবাব দেবে - সেই সর্বশক্তিমান ; মহাজ্ঞানী (আল্লাহ্)। " (সূরা যুখরুফ ৪৩:৯)
আল্লাহ্ অন্য আয়াতে আরো বলেন,
"এই পৃথিবী এবং পৃথিবীতে যারা আছে তারা কার? যদি তোমরা জানো তবে বলো। তারা বলবে, সবই আল্লাহর। " (সূরা মুমিনুনে : ৮৪, ৮৫)
উপরোক্ত আয়াত ছাড়াও আরো অসংখ্য আয়াতে আল্লাহ্ তাদের থেকে এই স্বীকারোক্তি নিয়েছেন যে, তারা রব হিসাবে একমাত্র আল্লাহ্কেই স্বীকার করে। সুতরাং যারা শির্ক করে তারা আল্লাহ্কে স্বীকার করে তবেই শির্ক করে।
মুশরিকরা ইব্রাহীম আঃ এর অনুসারীঃ
মক্কার মুশরিকরা ছিলো হানীফ অর্থাৎ সব মিথ্যা ধর্মের প্রতি বিমুখ এবং আত্নসমর্পণকারী, একনিষ্ঠ। তারা দাবি করতো তারা মিল্লাতে ইব্রাহীমের উপর প্রতিষ্ঠিত। তারা নিজেদের ইব্রাহীমের অনুসারী (হানীফ) বললেও আল্লাহ্ তাদের স্বীকার করেননি। তাদের স্বীকার না করে তাদের দাবির জবাব কুরআনে দিচ্ছেন এভাবে,
"(হে রাসুল) আপনি বলে দিনঃ আমার প্রতিপালক আমাকে সরল পথ প্রদর্শন করেছেন একাগ্রচিত্ত ইব্রাহীমের বিশুদ্ধ ধর্মে। সে (মুশরিকদের) অংশীবাদীদের অন্তর্ভূক্ত ছিল না"। (সূরাঃ আল আনআম, আয়াতঃ ১৬১)
অর্থাৎ মুশরিকরা নিজেদের ইব্রাহীমের অনুসারী বললেও ইব্রাহীম আঃ তাদের মতো মুশরিক ছিলো না। তিনি ছিলেন একমাত্র আল্লাহর ইবাদতকারী। তিনি আল্লাহর সাথে শরিক বা অংশীদার সাব্যস্ত করেননি। এবং আমাদের রাসুল সাঃও ইব্রাহীমের অনুসারী। তাই তিনিও আল্লাহর সাথে অংশীদার সাব্যস্ত করেন না এবং মুশরিকদেরও অংশীদার তথা শির্ক না করার জন্য আহবান জানান।
মুশরিকেরা ঈমান আনেঃ
যারা আল্লাহর সাথে শির্ক করে তারা ঈমান এনে তবেই শির্ক করে। মুশরিকরা মূলত আল্লাহ্কে বিশ্বাস করে। সেইসাথে সৃষ্টিজগতের সবকিছুর মালিকও মনে করে। কিন্তু তারা আল্লাহর পাশাপাশি অন্যান্য দেবদেবী কিংবা আল্লাহর কোনো নবী রাসুল ফিরিশতা এবং আল্লাহর কোনো অলি বা বুজুর্গকেও মানে।
অর্থাৎ তারা বিশ্বাস করে সবকিছুর ক্ষমতা আল্লাহর । তবে এইসব দেবদেবী কিংবা আল্লাহর অলিরা বা বুজুর্গদেরও কিছু কিছু ক্ষমতা আছে। এবং তারা আল্লাহর কাছে তাদের জন্য সুপারিশ করে। সুতরাং তাদের ঈমান রয়েছে কিন্তু তা শির্কযুক্ত। আল্লাহ্ বলেন,
" অধিকাংশ মানুষ আল্লাহতে বিশ্বাস করে, কিন্তু সাথে সাথে শিরকও করে"। (সূরা ইউসুফ ১২:১০৬)
সুতরাং যারা শির্ক করে মুশরিকে পরিনত হয় তারা আল্লাহ্কে বিশ্বাস তথা ঈমান আনে এবং সাথে সাথে শির্কও করে।
মুশরিকরা সালাত ও তাওয়াফকারীঃ
যেহেতু মুশরিকরা নিজেদের ইব্রাহীমের অনুসারী দাবি করতো। তাই তারা তাদের মতো করে কাবা ঘরে সালাত এবং তাওয়াফ করতো। যদিও তাদের সালাত তাওয়াফ কিছুই ইব্রাহীম আঃ এর মতো ছিলো না। তাদের ইবাদত ছিলো বেহায়াপনার মতো। মুশরিকরা যেমন উলঙ্গ হয়ে কা'বার তাওয়াফ করত অনুরূপ তাওয়াফের সময় মুখে আঙ্গুল দিয়ে শিস দিত ও দুই হাত দিয়ে তালি বাজাতো। আর এটিকে তারা ইবাদত ও পুণ্যের কাজ মনে করত। এই সম্পর্কে আল্লাহ্ বলেন,
"তাদের (জাহেলি যুগের মুশরিকদের) সালাত তো কিছু শিস দেয়া ও তালি বাজানো ছাড়া কিছুই ছিলো না "।( সূরা আনফাল ৮: ৩৫)
উপরোক্ত আয়াত দ্বারা এটা প্রমাণিত যে, যারা মুশরিক ছিলো তারাও সালাত ও তাওয়াফ ইত্যাদি পালন করতো।
মুশরিকরা দান সদকা করেঃ
মক্কার মুশরিকরাও যথেষ্ট দান সদকা করতো। গরীব দুঃখীদের জন্য সবসময় দুহাতে খরচ করতো। তারা হজ্জ্ব পালনকারীদের জন্য সবকিছুর ব্যবস্থা করতো। তাদের আপ্যায়ন করতো। সৎ পথের উপার্জন ধর্মীয় কাজে লাগাতো।
ইতিহাস সাক্ষী কাবা ঘর পূনঃনির্মাণ এর সময় সৎ টাকার অভাবে কাবার দেয়াল অর্ধেক রেখেই তৈরি করা হয়। অথচ তাদের অর্থের অভাব ছিলো না। কিন্তু সেই অর্থ সৎ পথের না হওয়ার কারনে তারা তা কাবার মতো পবিত্র জায়গায় খরচ করলো না। এ থেকে বুঝা গেলো তারা কত বেশি আল্লাহ্ বিশ্বাসী এবং ভীরু ছিলো। এটাই ছিলো তাদের দানের স্তর।
মুশরিকরা কুরবানি ও হজ্ব পালনকারীঃ
হযরত ইব্রাহিম (আঃ) থেকে হজ্জ্বের এবং কুরবানীর প্রচলন শুরু। মক্কার মুশরিকরা যেহেতু দাবি করতো তারা মিল্লাতে ইব্রাহিমের অনুসারী। সেহেতু তারা প্রতিবছরই হজ্জ্ব এবং কুরবানী পালন করতো। তখনকার মুশরিকদের কিছু গোত্র কাবা ঘরের রক্ষনাবেক্ষন করতো কিছু গোত্র হজ্জ্ব পালনকারীদের আপ্যায়ন করাতো।
তারা তাদের হজ্জ্বের নিয়মে উলঙ্গ হয়ে তাওয়াফ করে হজ্জ্ব পালন করতো। তাদের যুক্তি ছিলো আমরা বিভিন্ন পাপে আল্লাহর কাছে গুনাহগার হয়ে গেছি। তাই যেভাবে আল্লাহ্ পাঠিয়েছেন সেই ভাবেই হজ্জ্বের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে মাফ চাইতে হবে।
শুধু তাই নয় তারা কুরবানীও করতো। তাদের কুরবানীর কিছু ভাগ আল্লাহর জন্য, কিছু ভাগ তাদের পূর্ববর্তী অলি আউলিয়ার মূর্তির জন্য দিতো। আল্লাহর ভাগ থেকে তারাও নিতো। সূরা হজ্জ্ব এর ৩৭ নং আয়াতে আল্লাহ্ বলেন -
"আল্লাহ্ তাআলার কাছে কখনো (কুরবানীর) গোস্ত ও রক্ত পৌঁছায় না। বরং তাঁর কাছে তোমাদের তাকওয়াটুকুই পৌঁছায়। "
এই আয়াত নাযিলের প্রেক্ষাপট ছিলো মুশরিকদের কুরবানীকে ইংগিত করেই। তাদের কুরবানী এবং মুসলিমদের কুরবানীর পার্থক্য বুঝাতে এই আয়াত নাযিল হয়। (ইবনে কাছীর) অর্থাৎ ইসলামে কুরবানী করতে হবে একমাত্র আল্লাহ্কে সন্তুষ্টি করার উদ্দেশ্যে। কিন্তু মুশরিকরা কুরবানী করতো আল্লাহ্ সহ তাদের অন্যান্য দেব দেবী ও অলি আউলিয়াদের উদ্দেশ্যে।
বিপদে আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনাঃ
মক্কার মুশরিকরা আল্লাহ্কে স্বীকারের পাশাপাশি তাদের দেব দেবী ও আল্লাহর অলি আউলিয়াদের মূর্তিকেও ইলাহ হিসাবে মানতো। তাদের উভয়ের জন্যই তাদের ইবাদত বন্দেগী ছিলো। কিন্তু যখনই তারা বিপদে পড়ত তখনই তারা শুধুমাত্র আল্লাহ্কে সাহায্য করার জন্য ডাকতো এবং শুধু আল্লাহ্র কাছেই সাহায্য কামনা করতো। এই বিষয়ে আল্লাহ্ বলেন,
" তারা (মুশরিকরা) যখন জলযানে আরোহণ করে তখন (বিপদে পড়লে) একনিষ্ঠভাবে আল্লাহকে ডাকে। অতঃপর তিনি যখন স্থলে এনে তাদেরকে উদ্ধার করেন, তখনই তারা শরীক করতে থাকে "। (সূরাঃ আল আনকাবুত, আয়াতঃ ৬৫)
অন্য আয়াতে আল্লাহ্ বলেন,
" সমুদ্রে যখন বিপদ তোমাদেরকে পেয়ে বসে, তখন তাঁকে ছাড়া অন্য যাদেরকে তোমরা (উপাস্য ভেবে) আহবান কর তারা (তখন তোমাদের মন থেকে) হারিয়ে যায়। অতঃপর তিনি যখন তোমাদেরকে স্থলে এনে বাঁচিয়ে দেন, তখন তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও। মানুষ হল বড়ই অকৃতজ্ঞ"। ( বনী-ইসরাঈল ১৭:৬৭)
উপরোক্ত আয়াত ছাড়াও আরো অসংখ্য আয়াতে এটা প্রমাণিত যে যারা মুশরিক তারা বিপদে আপদে শুধুমাত্র এক আল্লাহ্কেই স্বরণ করতো। কেননা তাদের দৃঢ় বিশ্বাস ছিলো যে যেকোনো বিপদে উদ্ধার বা যেকোনো মনোকামনা পূরণ একমাত্র আল্লাহ্ই করতে পারেন।
মূর্তিরা সুপারিশকারীঃ
তৎকালীন মুশরিকরা দেব দেবী বা অলি আউলিয়াদের মূর্তি পূজা এইজন্যই করতো, যাতে করে সেইসব দেব দেবী অলি আউলিয়ারা আল্লাহর কাছে তাদের ব্যাপারে সুপারিশ করে। অর্থাৎ তারা মনে করতো তারা যেহেতু পাপী সেহেতু আল্লাহ্ তাদের কথা সরাসরি শুনবেন না বা রাখবেন না। আর এইসব দেব দেবী অলি আউলিয়ারা ছিলেন আল্লাহর প্রিয়। তাই তাঁরা যদি আল্লাহর কাছে সুপারিশ করে তাহলে আল্লাহ্ নিশ্চয়ই তাঁদের কথা রাখবেন। এই বিষয়ে পবিত্র কুরআনে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে,
" আর (মুশরিকরা) উপাসনা করে আল্লাহকে বাদ দিয়ে এমন বস্তুর, যা না তাদের কোন ক্ষতিসাধন করতে পারে, না লাভ এবং (তারা) বলে, এরা তো (দেবদেবী, অলি, আউলিয়ারা) আল্লাহর কাছে আমাদের সুপারিশকারী "। (সূরাঃ ইউনুস, আয়াতঃ ১৮)
আল্লাহ্ আরো বলেন,
" জেনে রাখুন, নিষ্ঠাপূর্ণ এবাদত আল্লাহরই নিমিত্ত। যারা আল্লাহ ব্যতীত অপরকে (দেবদেবী, অলি, আউলিয়া) উপাস্যরূপে গ্রহণ করে রেখেছে এবং (তারা) বলে যে, আমরা (মুশরিকরা) তাদের এবাদত এ জন্যেই করি, যেন তারা (এইসব দেবদেবী) আমাদেরকে আল্লাহর নিকটবর্তী করে দেয়"। (সূরাঃ আল-যুমার, আয়াতঃ ৩)
উপরোক্ত আয়াত দ্বারা মুশরিকদের মনোভাব খুবই সুস্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। তারা বলে, আমরা জানি এরা (অলি আউলিয়ার মূর্তি) আমাদের কোন উপকার করার ক্ষমতা রাখে না। তবে তাঁরা (অলি আউলিয়ারা) আল্লাহর কাছে আমাদের জন্য সাফাই বা সুপারিশ করে আমাদের প্রয়োজন মেটাবে।
বহু উপাস্যবাদীঃ
মক্কার মুশরিকরা এটা পছন্দ করতো না যে, তাদের শুধুমাত্র একজন আল্লাহ্ই রব হিসাবে থাকবে। তাদের ধারণা যতবেশী ইলাহ বা রব থাকবে ততবেশী ভালো। যতবেশী দেবদেবীর পূজা করবো ততবেশী সাহায্য পাবো এবং শক্তিশালী হবো। একজনের শক্তি আর অধিকজনের শক্তি কি এক হতে পারে? এটাই ছিলো তাদের অন্তর্নিহিত চিন্তা চেতনা। আর সেটা কুরআনেও স্পষ্টভাবে ফুটে উঠছে। কুরআনে এসেছে,
"সে (মুহাম্মদ সাঃ) কি অনেক মাবুদ (ইলাহ) কে একজন মাবুদ বানিয়ে নিয়েছে? এটা তো এক আশ্চর্যজনক ব্যপার ছাড়া কিছুই নয়! " (সূরা সোয়াদ : ৫)
উপরোক্ত আয়াত দ্বারাই এটা সুস্পষ্ট যে, মুশরিকরা কখনোই এক ইলাহতে সন্তুষ্ট নয়। এবং এটা তাদের জন্য খুবই বিস্ময়কর এবং আশ্চর্যজনক ব্যাপার। এইজন্যই মক্কার মুশরিকরা কখনোই এক আল্লাহ্তে সন্তুষ্ট থাকতে চায়নি। ফলে তারা আল্লাহর পাশাপাশি বিভিন্ন দেবদেবীকে উপাস্য হিসাবে গ্রহণ করে।
মুশরিকদের বহু উপাস্যবাদী ধারণার কারণে বর্তমানে সনাতন ধর্মের হিন্দুরাসহ যেসকল ধর্মের অনুসারীরা মূর্তি পূজা করে তারা সকলেই মুশরিক। যদিও তারা আল্লাহর সাথে শির্ক করে না। তথাপি তারা আল্লাহ্কে স্বীকারও করে না। ফলে তারা কাফির মুশরিক।
মুশরিকরা আল্লাহর দ্বীনকে অপছন্দ করেঃ
মক্কার মুশরিকরা আল্লাহ্কে মানলেও কখনোই আল্লাহর দ্বীন "ইসলামকে" পছন্দ করেনি। তারা মুখে আল্লাহ্কে স্বীকার করলেও কর্মে কখনোই আল্লাহর হুকুম আহকাম মেনে নেয়নি। তারা ইসলামের বিধি নিষেধ তথা ইসলামী শরিয়তকে কখনোই স্বীকার করতো না। তাই তারা প্রতিনিয়তই রাসুলুল্লাহ সাঃএর পিছনে পড়ে থাকতো। যাতেকরে রাসুলুল্লাহ আল্লাহর দ্বীন আর কারো কাছে পৌঁছেতে না পারে। তারা যে ইসলামকে অপছন্দ করতো সেই কথা কুরআনে এসেছে এভাবে,
" তিনিই প্রেরণ করেছেন আপন রসূলকে হেদায়েত ও সত্য দ্বীন সহকারে, যেন এ দ্বীনকে অপরাপর দ্বীনের উপর জয়যুক্ত করেন, যদিও মুশরিকরা তা অপ্রীতিকর (অপছন্দ) মনে করে"। (সূরাঃ আত তাওবাহ, আয়াতঃ ৩৩)
অন্য আয়াতে আল্লাহ্ বলেন,
" তিনি তাঁর রসূলকে পথ নির্দেশ ও সত্যধর্ম নিয়ে প্রেরণ করেছেন, যাতে একে সবধর্মের উপর প্রবল করে দেন যদিও মুশরিকরা তা অপছন্দ করে "। (সূরাঃ আছ-ছফ, আয়াতঃ ৯)
মুশরিকদের মানতঃ
মক্কার মুশরিকদের মধ্যে ব্যাপকভাবে মান্নতের প্রথা প্রচলিত ছিলো। তাদের ছোট বড় যেকোনো ঘটনা বা যেকোনো সফর বা যেকোনো কাজে তীর দিয়ে ভাগ্য গনণা করতো। ভাগ্য গনণায় ভাগ্য খারাপ হলে বা যেকোনো উদ্দেশ্য পূরণের নিমিত্তে মুশরিকরা যথেষ্ট মান্নত করতো। তাদের মান্নতও ছিলো ব্যাপক পরিধির এবং সেইসাথে অচিন্তনীয়!
বিভিন্ন সীরাত গ্রন্থে একটি ঘটনা উল্লেখিত আছে। মানতের কারণে হযরত মুহাম্মাদ সাঃএর দাদা আবদুল মোত্তালিব নিজ পুত্র আবদুল্লাহকে কাবার পাশে কোরবানী দিতে চাইলে প্রতিবেশীরা বাধা দেন। এই মানতটি আবদুল মোতালিব করেছিলেন যমযম কূপ পুনঃখননের সময়।
জমজম কূপ যখন নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল।তখন তিনি আল্লাহ’র কাছে শপথ করেছিলেন যে, কূপটি পাওয়া গেলে তার যদি দশটি ছেলে জন্ম নেয় তাহলে একটিকে তিনি আল্লাহ’র নামে জবাই করে উৎসর্গ করবেন। তার দশম সন্তান ছিলেন আব্দুল্লাহ অর্থাৎ মুহাম্মদ সাঃএর বাবা। তখন আবদুল্লাহ জন্মালে তিনি তার শপথ রক্ষা করতে তীর ছুড়ে সন্তান নির্বাচনের ব্যবস্থা করেন। আবদুল্লাহ নাম লেখা তীর উঠে আসলে আবদুল্লাকেই বলি দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
পরবর্তীতে বিভিন্ন ঘটনায় আব্দুল্লাহর পরিবর্তে ১০০টি উট কুরবানীর দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। যাইহোক মক্কাবাসীরাও মানত করতো তার প্রমাণ পবিত্র কুরআনে এসেছে এভাবে,
‘‘তারা যেন তাদের মানত পুরা করে নেয়’’। (হাজ্জ : ২৯)
অন্য আয়াতে আল্লাহ্ বলেন,
‘‘তোমরা যা ব্যয় করো বা মানত করো তা অবশ্যই আল্লাহ্ তা’আলা জানেন’’। (বাক্বারাহ্ : ২৭০)
এই দুই আয়াত যদিও মুমিনদের উদ্দেশ্যে নাযিল হয়েছিল। অর্থাৎ মুমিনরা যদি আল্লাহর উদ্দেশ্যে কোনো মানত করে থাকে তাহলে তা যেন তারা পূরণ করে। কিন্তু কখনোই আল্লাহর উদ্দেশ্যে ছাড়া মানত করা যাবেনা। যেমনটি মুশরিকরা করে থাকে। তখন মুশরিকদের জন্য তাদের মানতের কথা আল্লাহ্ বলছেন এভাবে,
‘‘মুশরিকরা আল্লাহ্ তা’আলার দেয়া শস্য ও পশু সম্পদের একাংশ তাঁর জন্যই নির্ধারিত করছে এবং তাদের ধারণানুযায়ী বলছে; এ অংশ আল্লাহ্ তা’আলার জন্য আর এ অংশ আমাদের শরীকদের। তবে তাদের শরীকদের অংশ কখনো আল্লাহ্ তা’আলার নিকট পৌঁছেনা। পক্ষান্তরে আল্লাহ্ তা’আলার অংশ তাদের শরীকদের নিকট পৌঁছে যায়। এদের ফায়সালা কতোই না নিকৃষ্ট’’। (আন্’আম : ১৩৬)
উপরোক্ত আয়াত দ্বারা সুস্পষ্ট প্রমাণিত হয় যে মুশরিকরাও মানত করতো। কিন্তু তাদের মানতগুলোর বেশিরভাগ ছিলো তাদের দেবদেবীর উদ্দেশ্যে। যা আল্লাহ্ এখানে নাকচ করে দিয়েছেন।
আল্লাহ্ চাইলে তারা মুশরিক হতো নাঃ
মুশরিকরা দাবি করে যে আল্লাহ্ তাদের পছন্দ করে। কেননা যদি আল্লাহ্ তাদের পছন্দ না করতো তাহলে তারা কখনোই সফলতা পেতো না। বা আল্লাহ্ না চাইলে কীভাবে তারা আল্লাহর সাথে শির্ক করতে পারে? অর্থাৎ মুশরিকদের বক্তব্য হলো আল্লাহর সন্তুষ্টি তাদের উপর আছে বলে তারা দেবদেবীদের ডাকলেও আল্লাহ্ তাদের কোনো ক্ষতি করছে না।
যদি সত্যিই আল্লাহ্ তাদের অপছন্দ করতো তাহলে তাদের অনেক আগেই বিভিন্ন ভাবে ধ্বংস করে দিতো। কিন্তু আল্লাহ্ সেটা না করার কারণে প্রমাণ হচ্ছে যে তাদের অবশ্যই আল্লাহ্ পছন্দ করছেন। পবিত্র কুরআনে তাদের কথা এভাবে বর্ণিত হয়েছে,
" মুশরিকরা বললঃ যদি আল্লাহ চাইতেন, তবে আমরা তাঁকে ছাড়া কারও এবাদত করতাম না এবং আমাদের পিতৃপুরুষেরাও করত না এবং তাঁর নির্দেশ ছাড়া কোন বস্তুই আমরা হারাম করতাম না"। (সূরাঃ নাহল, আয়াতঃ ৩৫)
অন্য আয়াতে আল্লাহ্ বলেন,
" এখন মুশরেকরা বলবেঃ যদি আল্লাহ ইচ্ছা করতেন, তবে না আমরা শিরক করতাম, না আমাদের বাপ দাদারা এবং না আমরা কোন বস্তুকে হারাম করতাম"। (সূরাঃ আল আনআম, আয়াতঃ ১৪৮)
উপরোক্ত আয়াত দ্বারা সুস্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে মুশরিকরা তাদের শির্কি কর্মকান্ডে কতটুকু সন্তুষ্ট ছিলো। তারা আল্লাহর রাসুলকে অস্বীকার করে দাবি করছে যে, আল্লাহ্ চাইলে তারা শির্ক করতো না। অথচ আল্লাহ্ তাঁর রাসুলের মাধ্যমে তাদের কতই না তাওহীদের দাওআত দিয়েছিলেন।
মুশরিকদের ব্যাপারে আল্লাহর ফায়সালাঃ
আল্লাহ্ পবিত্র কুরআনে মুশরিকদের ব্যাপারে অসংখ্য নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ করেছেন। যে নিষেধাজ্ঞা গুলো প্রতিটি মুসলমানের এবং মুসলিম রাষ্ট্রপ্রধান মেনে চলতে বাধ্য।
মুশরিকরা মসজিদে আবাদ করতে পারবে নাঃ
ইসলাম বিজয়ের পূর্বে মক্কার মুশরিকরাই ছিলো কাবা ঘরের রক্ষাকর্তা। কিন্তু তারা প্রকৃত অর্থে আল্লাহ্ স্বীকারকারী ছিলো না। ফলে তাদের ব্যাপারে আল্লাহর ফায়সালা হলো তারা কখনোই কাবা ঘরের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পাবে না। সুতরাং তাদের কাবা থেকে বিতাড়িত করার হুকুম আল্লাহ্ কুরআনেই দিয়ে দিয়েছেন। আল্লাহ্ বলেন,
" মুশরিকরা যোগ্যতা রাখে না আল্লাহর মসজিদ আবাদ করার, যখন তারা নিজেরাই নিজেদের কুফরীর স্বীকৃতি দিচ্ছে। এদের আমল বরবাদ হবে এবং এরা আগুনে স্থায়ীভাবে বসবাস করবে"। (সূরাঃ আত তাওবাহ, আয়াতঃ ১৭)
অন্য আয়াতে আল্লাহ্ বলেন,
" নিঃসন্দেহে তারাই আল্লাহর মসজিদ আবাদ করবে যারা ঈমান এনেছে আল্লাহর প্রতি ও শেষ দিনের প্রতি এবং কায়েম করেছে নামায ও আদায় করে যাকাত; আল্লাহ ব্যতীত আর কাউকে ভয় করে না। অতএব, আশা করা যায়, তারা হেদায়েত প্রাপ্তদের অন্তর্ভূক্ত হবে"। (সূরাঃ আত তাওবাহ, আয়াতঃ ১৮)
উপরোক্ত আয়াতে এটা স্বীকৃত হলো যে, মুশরিকরা কখনোই মসজিদে আবাদ তথা ইবাদত বন্দেগী এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত হতে পারে না। শুধুমাত্র প্রকৃত ঈমানদারাই মসজিদে ইবাদত বন্দেগী ও দায়িত্বপ্রাপ্ত হতে পারবে।
মুশরিক নারীদের বিয়ে করা যাবেনাঃ
মুশরিক নারীদের ঈমান আনা ছাড়া কখনোই বিয়ে করা যাবে না। অর্থাৎ কোনো মুমিন মুশরিক নারীদের বিয়ে করতে পারবে না। আল্লাহ্ বলেন,
" আর তোমরা মুশরেক নারীদেরকে বিয়ে করোনা, যতক্ষণ না তারা ঈমান গ্রহণ করে। অবশ্য মুসলমান ক্রীতদাসী মুশরেক নারী অপেক্ষা উত্তম, যদিও তাদেরকে তোমাদের কাছে ভালো লাগে। এবং তোমরা (নারীরা) কোন মুশরেকের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ো না, যে পর্যন্ত সে ঈমান না আনে। একজন মুসলমান ক্রীতদাসও একজন মুশরেকের তুলনায় অনেক ভাল, যদিও তোমরা তাদের দেখে মোহিত হও"। (সূরাঃ আল বাকারা, আয়াতঃ ২২১)
অন্য আয়াতে আল্লাহ্ বলেন,
" ব্যভিচারী পুরুষ কেবল ব্যভিচারিণী নারী অথবা মুশরিকা নারীকেই বিয়ে করে এবং ব্যভিচারিণীকে কেবল ব্যভিচারী অথবা মুশরিক পুরুষই বিয়ে করে এবং এদেরকে মুমিনদের জন্যে হারাম করা হয়েছে"। (সূরাঃ আন-নূর, আয়াতঃ ৩)
মুশরিকরা অপবিত্রঃ
আল্লাহ্ পবিত্র কুরআনে ঘোষণা দিয়েছেন যে মুশরিকরা অপবিত্র। আল্লাহ্ বলেন,
" হে ঈমানদারগণ! মুশরিকরা তো অপবিত্র"। (সূরাঃ আত তাওবাহ, আয়াতঃ ২৮)
অংশীবাদী বা মুশরিকরা অপবিত্র কথার অর্থ হল, আকীদা-বিশ্বাস ও আমল হিসাবে তারা (অভ্যন্তরীণভাবে) অপবিত্র। কারো কারো নিকটে মুশরিক বাহ্যিক ও আভ্যন্তরিক উভয়ভাবে অপবিত্র। কেননা, তারা পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নতার সেইরূপ খেয়াল রাখে না, যেরূপ ইসলামী শরীয়ত নির্দেশ করেছে।
মুশরিকদের জন্য দোয়া চাওয়া যাবে নাঃ
আল্লাহ্ মৃত মুশরিকদের জন্য মাগফেরাত তথা ক্ষমা চাওয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা রাজি করেছেন। আল্লাহ্ কখনোই পছন্দ করেন না কোনো মুমিন কোনো মুশরিকের জন্য দোয়া করে। আল্লাহ্ বলেন,
" নবী ও মুমিনের উচিত নয় মুশরেকদের মাগফেরাত কামনা করে, যদিও তারা আত্নীয় হোক একথা সুস্পষ্ট হওয়ার পর যে তারা দোযখী"। (সূরাঃ আত তাওবাহ, আয়াতঃ ১১৩)
সুতরাং যে আল্লাহর সাথে শির্ক করে মৃত্যুবরণ করে তার জন্য কখনোই দোয়া করা বৈধ নয়।
শির্কের কোনো ক্ষমা নেইঃ
আল্লাহর সুস্পষ্ট ঘোষণা যে, যারা আল্লাহর সাথে শরীক স্থাপন করে শির্ক করে। তাদের কোনো ক্ষমা নেই। আল্লাহ্ বলেন,
" যখন লোকমান উপদেশচ্ছলে তার পুত্রকে বললঃ হে বৎস, আল্লাহর সাথে শরীক করো না। নিশ্চয় আল্লাহর সাথে শরীক করা মহা অন্যায়"। (সূরাঃ লোকমান, আয়াতঃ ১৩)
অন্য আয়াতে আল্লাহ্ বলেন,
" নিশ্চয়ই আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন না, যে তাঁর সাথে কাউকে শরীক করে"। (সূরাঃ আন নিসা, আয়াতঃ ১১৬)
অপর আয়াতে আল্লাহ্ বলেন,
" আহলে-কিতাব ও মুশরেকদের মধ্যে যারা কাফের, তারা জাহান্নামের আগুনে স্থায়ীভাবে থাকবে। তারাই সৃষ্টির অধম"। (সূরাঃ বাইয়্যিনাহ, আয়াতঃ ৬)
সুতরাং উপরোক্ত আয়াত থেকে এটা স্পষ্ট হয়েছে যে, যারা শির্ক করে মুশরিকে পরিনত হবে, তাদের স্থান হবে জাহান্নাম। অতএব মুশরিকরা জাহান্নামী।
উপরোক্ত আলোচনা থেকে আমরা জানতে পারলাম মুশরিক কারা? কী তাদের পরিচিত? কী তাদের ধর্মীয় আকিদা? এবং আল্লাহ্ তাদের ব্যাপারে কী ফায়সালা নির্ধারণ করে রেখেছেন। তৎকালীন মুশরিকদের মতো উপমহাদেশে সুফিবাদীরাও মুশরিকি আকিদা পোষণ করে। যারা সত্যিকারের ইসলাম পালন করে তাদের উচিত সুফিবাদ সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করা। যাতে করে এই ভ্রান্ত মুশরিকি আকিদা থেকে দূরে থাকা যায়।
সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী
২৫ নভেম্বর, ২০২২১
পতেঙ্গা, চট্টগ্রাম।
Shakawatul83@gmail.com