উপর্যুক্ত হাদিস থেকে স্পষ্ট যে, বিভিন্ন আলামতের ভিত্তিতে রাসুলুল্লাহ সাঃ ২১তম রমাদানে কদরের রাত পেয়েছেন। অনুরূপ আরেকটি হাদিসে এসেছে,
আবদুল্লাহ ইবনু উনায়স (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আমাকে কদরের রাত দেখানো হয়েছিল। অতঃপর তা ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে। আমাকে ঐ রাতের ভোর সম্পর্কে স্বপ্ন আরও দেখানো হয়েছে যে, আমি পানি ও কাদার মধ্যে সাজদাহ করছি। রাবী বলেন, অতএব ২৩ তম রাতে বৃষ্টি হ’ল এবং রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের সাথে (ফজরের) সলাত আদায় করে যখন ফিরলেন, তখন আমরা তাঁর কপাল ও নাকের ডগায় কাদা ও পানির চিহ্ন দেখতে পেলাম। রাবী ‘আবদুল্লাহ ইবনু উনায়স (রাঃ) বলতেন, তা ছিল ২৩ তম। (সহিহ মুসলিম- ২৬৬৫)
উপর্যুক্ত হাদিস থেকেও রাসুলুল্লাহ সাঃ থেকে সরাসরি প্রমাণিত যে, রমাদানের ২৩ তম রাতে তিনি কদর পেয়েছেন। সুতরাং কদর ভিন্ন ভিন্ন রাতে পাওয়া এটাই প্রমাণ করে যে, কদরের রাত সুনির্দিষ্ট নয়। যা অসংখ্য হাদিস দ্বারা প্রমাণিত।
অতএব কেউ যদি ২৭তম রাত্রিকেই কদর ধরে ঐ একদিনই ইবাদত বন্দেগীতে মশগুল থাকে, তাহলে সে কখনোই সফলকাম হবেনা। কেননা রাসুলুল্লাহ সাঃ সরাসরি ২৭তম রাতকে একমাত্র হিসাবে কদরের রাত ঘোষণা করেননি। বরং তিনি ও তাঁর সাহাবীদের রাঃ থেকে প্রমাণিত যে, রমাদানের শেষ বিজোড় রাতে কদর তালাশ করেছেন এবং বিভিন্ন তারিখে তা পেয়েছেনও। আর এটাই হচ্ছে সঠিক।
কদর রাতের আলামত
পবিত্র হাদিসে ২৭শে রমাদানকে লাইলাতুল কদরের রাত ঘোষণা দেওয়া হলেও অন্যান্য অসংখ্য হাদিস দ্বারা এই মতকে সঠিক বলে স্বীকার করে নেওয়া হয়নি। কেননা অসংখ্য হাদিসে এসেছে কদরের রাত একটি নির্দিষ্ট তারিখে নয়। তবে রাসূলুল্লাহ সাঃ থেকে এই রাতের আলামত সম্পর্কে অসংখ্য তথ্য এসেছে। যা দিয়ে এই রাতকে চিহ্নিত করা যায়।
প্রথমতঃ এই রাত হবে অবশ্যই রমাদানের শেষ দশকের বিজোড় রাত্রি।
দ্বিতীয়তঃ এই রাতের আবহাওয়া হবে নাতিশীতোষ্ণ। অর্থাৎ স্বাভাবিক মাত্রার চাইতে বেশী গরম বা বেশী শীত ইত্যাদি থাকবে না। আবহাওয়া হবে খুবই আরামদায়ক।
তৃতীয়তঃ এই রাতে চারদিকে ফিনফিনে মৃদুমন্দ বাতাস প্রবাহিত হতে থাকবে। যা যেকোনো মানুষের অন্তরকে ঠান্ডা করে দিবে।
চতুর্থতঃ এই রাতের অন্ধকার অন্যান্য রাতের অন্ধকারের মতো গভীর হবেনা। অর্থাৎ এ রাতের অন্ধাকারের গভীরতা ও ব্যাপ্তি অন্যান্য রাতের তুলনায় কম হবে।
পঞ্চমতঃ এই রাতের ইবাদত বন্দেগী অন্যান্য যেকোনো দিনের চাইতে আনন্দদায়ক হবে। অর্থাৎ এই রাতে ইবাদত করে মানুষ অধিকতর তৃপ্তিবোধ করবে অন্যান্য রাতের চাইতে।
ষষ্ঠতঃ এই রাতে আকাশে হালকা মেঘ থাকতে পারে। সেইসাথে রাতে বৃষ্টি বর্ষণও হতে পারে।
সপ্তমতঃ এই রাত সম্পর্কে আল্লাহ্ তাঁর কোনো বান্দাকে স্বপ্নের মাধ্যমে জানিয়ে দিতে পারেন।
অষ্টমতঃ ঐ রাতের শেষে সকলটা হবে খুবই নির্মল। সকালের প্রথম সূর্যরশ্মিটা হবে হালকা আলোর ঝিলিকছটা। সূর্যোদয়ের প্রথম দর্শনে সূর্যকে মনে হবে পূর্ণিমার চাঁদের মতো।
বিভিন্ন হাদিসে উপরোক্ত আলামত সমূহের কথা আসলেও, কদরের রাত হওয়ার জন্য তা নিঃশর্ত নয়। অর্থাৎ কদরের রাত হওয়ার জন্য উপরোক্ত আলামত থাকতেই হবে এমন নয়। উপর্যুক্ত আলামত গুলো সরাসরি প্রকাশ না পেলেও কদরের রাত অতিক্রম হয়ে যাবে। তাই কখনোই আলামতের দিকে তাকিয়ে কদর তালাশ করা উচিত নয়। রাসূলুল্লাহ সাঃ এর হাদিস মতো রমাদানের শেষ দশকের বিজোড় রাতগুলোতে আমাদের অবশ্যই উচিত ইবাদত বন্দেগী করার।
মুমিনের করণীয়
প্রতিবছর শুধু একদিনই লাইলাতুল কদর আসে। তাও তা সুনির্দিষ্ট নয়। তাই প্রতিটি মুমিনেরই উচিত রাসূলুল্লাহর সাঃ বর্ণিত হাদিস অনুসারে কদরের রাতকে তালাশ করা। এইজন্য প্রথমেই যদি সম্ভব হয় ইতেকাফের নিয়ত করতে হবে। যাতেকরে খুব সহজেই মসজিদে নিরিবিলিতে ইবাদত বন্দেগী করা যায়।
রাসূলুল্লাহ সাঃ সবসময়ই রমাদানের শেষ দশদিন নিজে ইতেকাফ করেছেন এবং অন্যান্যদেরও ইতেকাফের তাগিদ দিয়েছেন। এর প্রধান কারণ হচ্ছে যাতে লাইলাতুল কদর পেতে সহজ এবং সুবিধা হয়। সুতরাং আমরাও যারা লাইলাতুল কদর পেতে চায় তাদের উচিত হবে ইতেকাফ করা।
সময়ের বাস্তবতার কারণে ইতেকাফ করা সম্ভব না হলেও অবশ্যই রমাদানের শেষ দশদিনের বিজোড় রাতগুলোতে রাত জেগে ইবাদত করার চেষ্টা করতে হবে। একইসাথে কুরআন হাদিসের বর্ণিত বিভিন্ন দোয়া দরুদ, জিকির আজকার, তসবি তাহলিল ইত্যাদি পাঠ করতে হবে।
মনে রাখতে হবে যে, কদরের রাত হচ্ছে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম রাত। এই রাতের মূল উদ্দেশ্যই হলো আল্লাহ্কে রাজি খুশি করানো। তাই রাতে আল্লাহ্র কাছে ক্ষমা চাওয়াই হচ্ছে মুমিনের প্রকৃত কাজ। এজন্য হাদিসে যে দোয়াটি বেশী এসেছে সেই দোয়া, যা মা আয়েশা সিদ্দিকা থেকে বর্ণিত হয়েছে তা বেশী বেশী করে পাঠ করা। দোয়াটি হলো, "আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউউন তুহিব্বুল আফওয়া ফাফু আন্নি’। অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমাশীল; আপনি ক্ষমা করতে ভালোবাসেন। অতএব আমাকে ক্ষমা করে দিন।’
একইসাথে বিভিন্ন নফল সালাতের পাশাপাশি বেশী বেশী কুরআন তিলাওয়াত করে আল্লাহ্র কাছে বিগত পাপের জন্য তওবা ও ক্ষমা চাওয়া। এবং বেশী বেশী সাইয়্যেদুল ইসতেগফার পড়া। উত্তম হলো নফল সালাত ধীরে সুস্থে লম্বা লম্বা কেরাত দিয়ে পড়া এবং রুকু-সিজদাতেও তাড়াহুড়া না করা। সেইসাথে রমাদানের শেষ দশদিন অবশ্যই জামাতে সালাত আদায় করা।
রমাদান মাস হচ্ছে দান সদকা করার সবচেয়ে উত্তম সময়। তাই এই মাসে প্রতিদিনই কিছু না কিছু দান করা উচিত। লাইলাতুল কদরের পরিপূর্ণ ফজিলত পেতে রমাদানের শেষ বিজোড় রাতে বেশী বেশী দান করা উচিত।
পুরো রমাদানই হচ্ছে আল্লাহ্র রহমত, মাগফিরাত এবং নাজাতের মাস। তাই আমাদের উচিত বিজোড় রাত্রি গুলোতে বেশী বেশী পরিবার পরিজন, বাবা-মা ও মৃতদের জন্য দোয়া করা।
গুরুত্বপূর্ণ আমল
লাইলাতুল কদরের প্রধান মর্যাদা হচ্ছে, এই রাতে পবিত্র কুরআন নাযিল হওয়া। আর কুরআন হচ্ছে মানবজাতির জন্য মহান এবং সর্বশ্রেষ্ঠ নিয়ামত। যা কিয়ামতের আগ পর্যন্ত বিরাজমান থাকবে। সুতরাং যে মুমিন নিজের জীবনকে আল্লাহ্র রাস্তায় প্রতিষ্ঠিত করতে চায়, তাকে অবশ্যই কুরআনের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে।
কুরআনের সাথে সম্পর্কহীন থেকে কোনো মুসলিম কখনোই প্রকৃত ঈমানদার হতে পারবে না। কুরআনের সাথে সম্পর্ক করার অর্থ হচ্ছে, কুরআন অনুযায়ী জীবনযাপন করা। কুরআনের আইনকানুন, বিধিবিধান ইত্যাদি মেনে চলা।
সুতরাং লাইলাতুল কদরে প্রতিটি মুসলিমের শপত করা উচিত যে, আজকের পর থেকে বাকি জিন্দেগী কুরআনের অনুসারে চলবো। এটাই হবে লাইলাতুল কদরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং সর্বশ্রেষ্ঠ আমল। যদি কেউ নিয়ত করে এবং সেই অনুযায়ী চলতে পারে তাহলে তা হবে তার জীবনের সবচেয়ে বড় ও সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন।
এই রাতের গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো, বিগত দিনের বিভিন্ন পাপের জন্য আল্লাহ্র নিকট ক্ষমা চাওয়া। তবে মনে রাখতে হবে যে, আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাওয়ার পূর্বশর্ত হচ্ছে খাঁটি অন্তরে তওবা করা। খাঁটি তওবা বা তওবাতুন নছুহার চারটি শর্ত রয়েছে।
ক) প্রথমেই নিয়ত করতে হবে পূর্বের সকল পাপ কাজ আজ এখন থেকেই ছেড়ে দিবো। এবং নতুন করে কোনো গুনাহ করবো না
খ) যে পাপ করেছি তার জন্য আন্তরিকভাবে অনুতপ্ত হতে হবে। এবং এটাই মনে করতে হবে যে আমি যা করেছি তা খুবই অন্যায়।
গ) আজ এই মুহূর্ত থেকে ঐ গুনাহ আর করবো না বলে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা গ্রহণ করতে হবে।
ঘ) আল্লাহ্র হকের জন্য আল্লাহ্র কাছে ক্ষমা চাওয়ার পর, বান্দার কোনো হক নষ্ট করে থাকলে সে হক যথাসাধ্য আদায় করার চেষ্টা করতে হবে। নতুবা যে বান্দার হক নষ্ট হয়েছে তার কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।
ঙ) উপরোক্ত সব কাজ করার পর সর্বশেষে অন্তরকে নরম করে চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে আল্লাহর নিকট কেঁদে কেঁদে ক্ষমা চাইতে হবে। তবেই আল্লাহ্ চাইলে বান্দার তওবার কবুল করতে পারেন।
কদরের যা পরিহার করতে হবে
কদর রাতের তারিখ যদিও নির্দিষ্ট নয়। তবুও আমাদের উপমহাদেশে ২৭ তম রাতকে কদর ধরে বিভিন্ন মনগড়া কিছুু আমলের প্রচলন হয়েছে। আমাদের উচিত এইসব মনগড়া আমল থেকে দূরে থাকা। বিশেষ করে এই রাতের সালাতকে নির্দিষ্ট রাকাতে পড়া। যেমন আমাদের সমাজে ১২ রাকাত বা ২০ রাকাত নামাজের যে প্রচলন রয়েছে সেটা সম্পূর্ণ বিদআত।
কেননা এই রাত উপলক্ষে কোনো নির্দিষ্ট রাকাতের সালাত নেই। কদরের পুরো রাত জুড়েই চাইলে সালাতসহ যেকোনো জিকির আজকার করা যায়। বাজারে প্রচলিত বিভিন্ন বইয়ে কদরের সালাতের নামে যেসব বিধান ও নির্দিষ্ট সূরা পাঠের যে নিয়ম-কানুন বর্ণিত রয়েছে তা শুদ্ধ নয়। রাসূলুল্লাহ সাঃ থেকে এইধরণের নিয়ম বা বিধানের কোনো প্রমাণ নেই। সুতরাং এসব মনগড়া পদ্ধতি বাদ দিয়ে সুন্নাহ ত্বরিকায় বিভিন্ন আমল-ইবাদত করা উচিত।
এই রাতকে কেন্দ্র করে অধিকাংশেরও বেশী মসজিদ মাজারের চারদিকে আলোকসজ্জা করা হয়। যা কখনোই ইসলামী সংস্কৃতি নয়। এইসব হিন্দুদের দীপাবলির অনুরূপ। সুতরাং এই রাত উপলক্ষে সকল প্রকার বেহুদা অনর্থক আলোকসজ্জা করা থেকে বিরত থাকতে হবে। কেননা তা অপচয়।
এই রাত উপলক্ষে অধিকাংশ মুসলমানের আকিদা হচ্ছে, বিভিন্ন মাজার কবরস্থানে গিয়ে কবর জিয়ারত করা। অথচ রাসূলুল্লাহ সাঃ থেকে এই রাত উপলক্ষে কবর জিয়ারতের কোনো আমল নেই। সুতরাং ভালো হলেও লাইলাতুল কদরে কবর জিয়ারত না করা উত্তম। কেননা এই রাত হচ্ছে ইবাদত বন্দেগীর রাত।
এছাড়াও উপমহাদেশের অধিকাংশ মুসলমান কদরের রাতে দল বেঁধে বিভিন্ন মসজিদে মাজারে গিয়ে ঘোরাঘুরি করে নানান উৎসবে মেতে উঠে। আমাদের সবাইকে একটি কথা গুরুত্বসহকারে মনে রাখতে হবে যে, মহিমান্বিত লাইলাতুল কদর অহেতুক কোনো আয়োজনে লিপ্ত হওয়ার জন্য নাযিল হয়নি। তাই সকলের উচিত কদরের রাতের প্রতিটি সেকেন্ড, মিনিট ও ঘণ্টা কোরআন-সুন্নাহ বর্ণিত বিভিন্ন ইবাদত বন্দেগীতে ব্যয় করা।
কদর রাত রহস্যাবৃত কেন
বিভিন্ন হাদিস থেকে প্রমাণিত যে, কদরের কয়েকটি তারিখ বর্ণিত হলেও অধিকাংশ হাদিসের মূল সারমর্ম হচ্ছে কদরের রাত সুনির্দিষ্ট নয়। আর আল্লাহ্ নিজেই চেয়েছেন এই রাত সুনির্দিষ্ট না থেকে রহস্যময়ই থাক। তাই রাসূলুল্লাহ সাঃ কদরের রাত তালাশ করার তাগিদ দিয়েছেন। এই রাত রহস্যময় হওয়ার কয়েকটি কারণ বিজ্ঞ আলেমরা বর্ণনা করেছেন। তা হলোঃ
১) এমনিতেই মুসলমানদের মধ্যে দিনদিন ইবাদত বন্দেগী না করার প্রবণতা বেড়ে যাচ্ছে। তার উপর কদরের রাত নির্দিষ্ট করা হলে অধিকাংশেরও বেশী মুসলমান ইবাদতে অলসতা করতো। এবং তারা নিয়মিত ইবাদত বন্দেগী ছেড়ে এক রাতের ইবাদত করার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়তো। যা এখনও দেখা যাচ্ছে।
২) কদরের রাত নির্দিষ্ট থাকলে এবং কোনো কারণে কোনো আবেদী বান্দা ঐ রাতে ইবাদত করতে অসমর্থ হলে সে নিরাশায় পতিত হয়ে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়বে। ফলে তার আর সারাবছরের ইবাদতের প্রতি আকর্ষণ কমে যাবে কিংবা ছেড়ে দিবে। আর এমনটা হলে সে আল্লাহ্র দৃষ্টিতে অপরাধীতে পরিনত হবে।
৩) কদরের রাত নির্দিষ্ট হলে মানুষ সারাবছর রাত জেগে তাহাজ্জুত গুজার করবে না। অথচ তাহাজ্জুতের মর্যাদা আল্লাহ্র কাছে অনেক বেশী। এছাড়াও রমাদানের ইবাদত বছরের অন্যান্য সময়ের ইবাদতের চাইতে অনেক বেশী নেকীপূর্ণ। তাই কদরের রাত নির্দিষ্ট না হওয়ার কারণে সকলেই রাতজেগে সালাত আদায় করবে। যা তাদের আমলকে অধিকতর নেকীতে পূর্ণ করবে।
৪) যেহেতু এইরাতের আমলে নেকীর পরিমান বেশী, সেহেতু এই রাতের পাপের গুনাহও বেশী। যদি এই রাত নির্দিষ্ট হতো এবং যারা পাপী তাপী বান্দা, তারা যদি জেনেশুনে পাপে লিপ্ত হলে তাদের গুনাহের পরিমাণ বেড়ে যেতো। তাই কদরের রাত নির্দিষ্ট না হওয়ায় এর উপকারিতা বেশী।
এই রাতে সফলকাম কারা
আল্লাহ্ প্রতিবছর লাইলাতুল কদরের মতো একটি মহান। রেখেছেন, যাতে তাঁর পাপী বান্দারা তাদের গুনাহ ক্ষমা করিয়ে পরিশুদ্ধ হতে পারে। সেইসাথে তাঁর খাস বান্দারা এই রাতে ইবাদত বন্দেগী করে তাদের মর্যাদা ও মর্তবা আরও উন্নতি করতে পারে।
সুতরাং এই রাতে তারাই প্রথমত সফল যারা অতীতের সকল পাপ থেকে সরে আসার তওবা করে আল্লাহ্র কাছে ক্ষমা চেয়ে ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয়। সেইসাথে এই রাতে তারাই সফল যারা কুরআনের আলোকে নিজেদের জীবন সাজিয়েছে।
কদরের রাত সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ কারণ এই রাতে কুরআন নাযিল হয়েছে। সুতরাং লাইলাতুল কদরে আল্লাহ্র সেইসব বান্দারা সবচেয়ে বেশি সম্মানিত ও মর্যাদার অধিকারী হবেন, যাদের সাথে কুরআনের সম্পর্ক বেশি হবে। অর্থাৎ যারাই নিজেদের জীবন কুরআনের আলোকে গড়বেন তারাই হবে সবচেয়ে সফল।
শয়তানের বিভিন্ন ফাঁদ ও প্রতারণায় এবং মানুষের ভিতরে জাগতিক লোভ লালসায় আমরা দিনদিন আল্লাহ্ বিমুখ হয়ে পড়ছি। আজ আমাদের মুসলিম সমাজে শতকরা ১০জনও মুসল্লি মসজিদে নিয়মিত হয়না। সুদ ঘুষ দূর্নীতিসহ নানান অপরাধে অপরাধী আমরা। সুতরাং যারাই এইসব পাপ থেকে মুক্ত থেকে সত্যিকারভাবে আল্লাহ্কে এই রাতে ডাকতে পারবে তারাই পাবেন প্রকৃত সফলতা।
যদি কেউ সারাবছর অসৎ পথে চলে, সালাত এবং অন্যান্য বিধি বিধানের তোয়াক্কা না করে শুধু এই কদরের সারারাত জেগে সালাত আদায় করলেও তার ইবাদত পরিপূর্ণ হবে না। যদি তার নিয়ত না থাকে তওবা করে ভালো হওয়ার। তওবা করলে তবেই আল্লাহ্ তাকে ক্ষমা এবং এর বিনিময় প্রদান করবেন।
শুধু এক রাতের ইবাদতে হাজার মাসের ইবাদত কখনোই হবে না যদি সারাবছর ইবাদত করা না হয়। আমাদের উপমহাদেশের ঐতিহ্য হলো সারাবছর সালাত কিয়াম নাই শুধু রমাদান এলেই এক মাস সালাত সাওম ব্যতিব্যস্ত। যা আল্লাহ্র একপ্রকার ধোঁকাবাজি।
সুতরাং এই রাতের পরিপূর্ণ বরকত পেতে হলে অবশ্যই পূর্ণ ঈমানের সহিত কুরআনের আলোকে জীবনযাপন করতে হবে। কুরআনের আলোকে জীবনযাপন করা ছাড়া কখনোই কেউ সফলতা অর্জন করতে পারবে না।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ দোয়া
পবিত্র লাইলাতুল কদরের রাতে নফল সালাতের পাশাপাশি বেশী বেশী জিকির আজকার দোয়া দরুদ পড়া উচিত। বিশেষকরে কুরআন হাদিসে বর্ণিত দোয়া সমূহ। যেমনঃ
رَبِّ اغْفِرْ وَارْحَمْ وَأَنْتَ خَيْرُ الرَّاحِمِيْنَ
উচ্চারণ : 'রাব্বিগফির ওয়ারহাম ওয়া আংতা খাইরুর রাহিমিন।'
অর্থ : ‘হে আমার প্রভু! (আমাকে) ক্ষমা করুন এবং (আমার উপর) রহম করুন; আপনিই তো সর্বশ্রেষ্ঠ রহমকারী।' (সুরা মুমিনুন : আয়াত ১১৮)
رَبَّنَا آمَنَّا فَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا وَأَنتَ خَيْرُ الرَّاحِمِينَ
উচ্চারণ : 'রাব্বানা আমান্না ফাগফিরলানা ওয়ারহামনা ওয়া আংতা খাইরুর রাহিমিন।'
অর্থ : 'হে আমাদের পালনকর্তা! আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি। অতএব তুমি আমাদেরকে ক্ষমা কর ও আমাদের প্রতি রহম কর। তুমি তো দয়ালুদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ দয়ালু।' (সুরা মুমিনুন : আয়াত ১০৯)
رَبِّ إِنِّيْ ظَلَمْتُ نَفْسِيْ فَاغْفِرْ لِيْ
উচ্চারণ : 'রাব্বি ইন্নি জ্বালামতু নাফসি ফাগফিরলি।'
অর্থ : '(হে আমার) প্রভু! নিশ্চয়ই আমি নিজের উপর জুলুম করে ফেলেছি, অতএব আপনি আমাকে ক্ষমা করুন।' (সুরা কাসাস : আয়াত ১৬)
رَبَّنَا إِنَّنَا آمَنَّا فَاغْفِرْ لَنَا ذُنُوْبَنَا وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ
উচ্চারণ : 'রাব্বানা ইন্নানা আমান্না ফাগফিরলানা জুনুবানা ওয়া ক্বিনা আজাবান নার।'
অর্থ : হে আমাদের রব! নিশ্চয়ই আমরা ঈমান এনেছি, সুতরাং তুমি আমাদের গোনাহ ক্ষমা করে দাও এবং আমাদেরকে জাহান্নামের আযাব থেকে রক্ষা কর।' (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৬)
رَبَّنَا اصْرِفْ عَنَّا عَذَابَ جَهَنَّمَ ۖ إِنَّ عَذَابَهَا كَانَ غَرَامًا
উচ্চারণ : রাব্বানাস্বরিফ ‘আন্না ‘আযাবা জাহান্নাম, ইন্নাঁ ‘আযাবাহা কানা গ্বরামা।
অর্থ : “হে আমার পালনকর্তা, আমাদের কাছ থেকে জাহান্নামের শাস্তি হঠিয়ে দাও। নিশ্চয় এর শাস্তি নিশ্চিত বিনাশ। (সূরা আল ফুরক্বান- ৬৫)
رَبَّنَا لَا تُزِغْ قُلُوبَنَا بَعْدَ إِذْ هَدَيْتَنَا وَهَبْ لَنَا مِن لَّدُنكَ رَحْمَةً ۚ إِنَّكَ أَنتَ الْوَهَّابُ
উচ্চারণ : রাব্বানা লা তুজিগ ক্বুলুবানা বা’দা ইয হাদায়তানা ও হাবলানা মিল্লাদুনকা রাহমাহ,ইন্নাকা আনতাল ওহ্হাব।
অর্থ : “হে আমাদের পালনকর্তা ! সরল পথ প্রদর্শনের পর তুমি আমাদের অন্তরকে ফিরিয়ে দিওনা এবং তোমার নিকট থেকে আমাদিগকে অনুগ্রহ দান কর। তুমিই সব কিছুর দাতা। (সূরা আল-ইমরান-০৮)
رَبَّنَا ظَلَمْنَا أَنْفُسَنَا وَإِنْ لَّمْ تَغْفِرْ لَنَا وَتَرْحَمْنَا لَنَكُونَنَّ مِنَ الْخَاسِرِيْنَ
উচ্চারণ : 'রাব্বানা জ্বালামনা আংফুসানা ওয়া ইল্লাম তাগফিরলানা ওয়া তারহামনা লানাকুনান্না মিনাল খাসিরিন।'
অর্থ : ‘হে আমাদের প্রভু! আমরা নিজেদের প্রতি জুলুম করেছি। যদি আপনি আমাদেরকে ক্ষমা না করেন এবং আমাদের প্রতি দয়া না করেন, তবে আমরা অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে যাবো।' (সুরা আরাফ : আয়াত ২৩)
رَبَّنَا اغْفِرْ لِيْ وَلِوَالِدَيَّ وَلِلْمُؤْمِنِيْنَ يَوْمَ يَقُوْمُ الْحِسَابُ
উচ্চারণ : 'রাব্বানাগফিরলি ওয়া লিওয়ালিদাইয়্যা ওয়া লিলমুমিনিনা ইয়াওমা ইয়াকুমুল হিসাব।'
অর্থ : হে আমাদের প্রভু! যেদিন হিসাব কায়েম হবে, সেদিন তুমি আমাকে, আমার বাবা-মাকে ও মুমিনদেরকে ক্ষমা কর।' (সুরা ইবরাহিম : আয়াত ৪১)
سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا غُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَإِلَيْكَ الْمَصِيْرُ
উচ্চারণ : 'সামিনা ওয়া আত্বানা গুফরানাকা রাব্বানা ওয়া ইলাইকাল মাছির।'
অর্থ : ‘আমরা (আপনার বিধান) শুনলাম এবং মেনে নিলাম। হে আমাদের রব! আমাদের ক্ষমা করুন। আপনার দিকেই তো (আমাদের) ফিরে যেতে হবে।’ (সুরা আল-বাকারাহ : আয়াত ২৮৫)
رَبَّنَا وَلاَ تُحَمِّلْنَا مَا لاَ طَاقَةَ لَنَا بِهِ وَاعْفُ عَنَّا وَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا أَنتَ مَوْلاَنَا
উচ্চারণ : 'ওয়াফু আন্না ওয়াগফিরলানা ওয়ারহামনা আংতা মাওলানা ফাংছুরনা আলাল ক্বাওমিল কাফিরিন।'
অর্থ : 'হে আমাদের রব! যে বোঝা বহন করার সাধ্য আমাদের নেই, সে বোঝা আমাদের উপর চাপিয়ে দিয়ো না। আমাদের পাপ মোচন করুন। আমাদের ক্ষমা করুন এবং আমাদের প্রতি দয়া করুন। তুমিই আমাদের প্রভু।' (সুরা বাকারাহ : আয়াত ২৮৬)
رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا وَلِإِخْوَانِنَا الَّذِيْنَ سَبَقُوْنَا بِالْإِيْمَانِ
উচ্চারণ : 'রাব্বানাগফিরলানা ওয়ালি ইখওয়ানিনাল্লাজিনা সাবাকুনা বিল ঈমানি।'
অর্থ : ‘হে আমাদের প্রভু! আমাদের ক্ষমা করুন এবং যারা আমাদের আগে যারা ঈমান নিয়ে মৃত্যুবরণ করেছে, তাদেরকেও ক্ষমা করুন।' (সুরা হাশর : আয়াত ১০)
رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا ذُنُوْبَنَا وَإِسْرَافَنَا فِيْ أَمْرِنَا وَثَبِّتْ أَقْدَامَنَا وَانْصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِيْنَ
উচ্চারণ : 'রাব্বানাগফিরলানা জুনুবানা ওয়া ইসরাফানা ফি আমরিনা ওয়া ছাব্বিত আক্বদামানা ওয়াংছুরনা আলাল ক্বাওমিল কাফিরিন।'
অর্থ : ‘হে আমাদের প্রভু! আমাদের ভুল-ত্রুটিগুলো ক্ষমা করে দিন। আমাদের কাজের মধ্যে যেখানে তোমার সীমালঙ্ঘন হয়েছে, তা মাফ করে দিন। আমাদের কদমকে অবিচল রাখুন এবং অবিশ্বাসীদের মোকাবেলায় আমাদের সাহায্য করুন।' (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৪৭)
رَبَّنَا فَاغْفِرْ لَنَا ذُنُوْبَنَا وَكَفِّرْ عَنَّا سَيِّئَاتِنَا وَتَوَفَّنَا مَعَ الْأَبْرَارِ
উচ্চারণ : 'রাব্বানা ফাগফিরলানা জুনুবানা ওয়া কাফফির আন্না সায়্যিআতিনা ওয়া তাওয়াফফানা মাআল আবরার।'
অর্থ : 'হে আমাদের প্রভু! সুতরাং আমাদের গোনাহগুলো ক্ষম করুন। আমাদের ভুলগুলো দূর করে দিন এবং সৎকর্মশীল লোকদের সাথে আমাদের শেষ পরিণতি দান করুন।' (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৯৩)
رَبِّ هَبْ لِي مِن لَّدُنْكَ ذُرِّيَّةً طَيِّبَةً إِنَّكَ سَمِيعُ الدُّعَاء
উচ্চারণ : রাব্বী হাবলী মিল্লাদুনকা যুর্যিইয়াতান ত্বায়্যিবাতান ইন্নাকা সামিউদ্দোয়া।
অর্থ : হে আমার পালকর্তা! তোমার নিকট থেকে আমাকে পূত-পবিত্র সন্তান দান করো, নিশ্চয়ই তুমি প্রার্থনা শ্রবণকারী। (সূরা আলে ইমরান: ৩৮)
হাদিসে বর্ণিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ দোয়া
ক্ষমা প্রার্থনার শ্রেষ্ঠ দোয়া, যাকে বলা স্যাইদুল ইস্তেগফার:
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা আনতা রাব্বি লা ইলা-হা ইল্লা আনতা খালাক্বতানি, ওয়া আনা আবদুকা ওয়া আনা আলা আহদিকা ওয়া ওয়াদিকা মাস্তাত্বাতু। আউজুবিকা মিন শাররি মা ছানাতু। আবুউ লাকা বিনি’মাতিকা আলাইয়া, ওয়া আবুউ বিযাম্বি, ফাগফিরলি ফাইন্নাহু লা ইয়াগফিরুয যুনুবা ইল্লা আনতা। (বুখারি, মিশকাত)
অর্থ : হে আল্লাহ! তুমি আমার প্রতিপালক। তুমি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। তুমি আমাকে সৃষ্টি করেছ এবং আমি তোমার দাস। আমি তোমার কাছে কৃত অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতির ওপর সাধ্যমতো দৃঢ় আছি। আমি আমার কৃতকর্মগুলোর অনিষ্টকারিতা থেকে তোমার আশ্রয় চাচ্ছি। আমার ওপর তোমার অনুগ্রহ স্বীকার করছি এবং আমি আমার পাপগুলো স্বীকার করছি। সুতরাং তুমি আমাকে ক্ষমা করো। কেননা তুমি ছাড়া ক্ষমা করার কেউ নেই।
ঋণমুক্তির দোয়া :
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মাক ফিনি বিহালা-লিকা আন হারামিকা ওয়া আগিননি বিফাদিলকা আম্মান সিওয়াকা।
অর্থ : হে আল্লাহ! তুমি আমাকে হারাম ছাড়া হালাল (সম্পদ) দিয়ে যথেষ্ট করে দাও এবং তোমার অনুগ্রহ দিয়ে আমাকে অন্যদের থেকে মুখাপেক্ষীহীন করো।(তিরমিজি, বায়হাকি, মিশকাত, হাদিস : ২৪৪৯)
তাওবার দোয়া :
উচ্চারণ : ‘আস্তাগফিরুল্লা-হাল্লাজি লা ইলা-হা ইল্লা হুওয়াল হাইয়ুল ক্বাইয়ূমু ওয়া আতূবু ইলাইহি। ’
অর্থ : আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। যিনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। যিনি চিরঞ্জীব ও বিশ্বচরাচরের ধারক। আর আমি তাঁর দিকেই ফিরে যাচ্ছি (তাওবা করছি)। (মুসলিম, মিশকাত)
জান্নাত প্রার্থনা ও জাহান্নাম থেকে বাঁচার দোয়া :
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা আদখিলনিল জান্নাতা ওয়া আজিরনি মিনান্নার (তিনবার)।
অর্থ : হে আল্লাহ! তুমি আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাও এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি দাও। (তিরমিজি, নাসাঈ, মিশকাত)
উপরোক্ত আলোচনা থেকে এটা সুস্পষ্ট যে, লাইলাতুল কদরের রাত প্রতিটি মুসলিমের জন্য খুবই মর্যাদাপূর্ণ ও ফজিলতপূর্ণ। তাই প্রতিটি মুমিনের উচিত এই রাতে যথাসাধ্য ইবাদত বন্দেগী করে আল্লাহ্র কাছ থেকে অতীতের সকল গুনাহর ক্ষমা চেয়ে পরিপূর্ণ তওবা করা। একইসাথে শুধু ২৭শে রমাদানকে কদর মনে না করে রাসূলুল্লাহ সাঃ এর সুন্নাহ অনুযায়ী রমাদানের শেষ দশদিনের বিজোড় রাতে কদর তালাশ করা। সেইসাথে এই রাত উপলক্ষে সকল প্রকার বিদআতী আমল পরিহার করা। শুধু এই রাত বা শুধু রমাদান মাস নয় আমাদের উচিত হবে আজকের পর থেকে বাকি জিন্দেগী যাতে ঈমান আমলে সালাত কিয়ামে রত থেকে দুনিয়া থেকে বিদায় নিতে পারি সেই ওয়াদা করা। ইনশা আল্লাহ্ তাহলেই আমরা সফল হবো।
তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট
সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী
২০ এপ্রিল, ২০২২
পতেঙ্গা, চট্টগ্রাম।