"এ রাতে প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয় স্থিরীকৃত হয়।" (সূরাঃ আদ দোখান, আয়াতঃ ৪)
‘নিশ্চয়ই আমি কোরআন নাজিল করেছি লাইলাতুল কদরে।’ (সুরা কদর : ১)
" আপনি কি জানেন লাইলাতুল কদর কী? লাইলাতুল কদর হাজার মাসের চেয়েও উত্তম।"(সুরা কদর : ২-৩)
"এতে প্রত্যেক কাজের জন্যে ফেরেশতাগণ ও রূহ (জিব্রাইল আঃ) অবতীর্ণ হয় তাদের পালনকর্তার নির্দেশক্রমে।"(সূরাঃ কদর, আয়াতঃ ৪)
"সে রাতে প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হয়, আমার নির্দেশে।" (দুখান ৩)
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে, সওয়াব লাভের আশায় লাইলাতুল কদরের রাত জেগে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করে, তার পূর্ববর্তী গুনাহসমূহ মাফ করে দেয়া হয়। (সহিহ বুখারী- ২০১৪)
"শান্তিময় সেই রাত, যা ফজরের উদয় পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।" (সূরাঃ কদর, আয়াতঃ ৫)
"আমি একে (কুরআনকে) নাযিল করেছি। এক বরকতময় (কদরের) রাতে, নিশ্চয় আমি সতর্ককারী। "(সূরাঃ আদ দোখান: ৩)
"আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা রমাদানের শেষ দশকের বেজোড় রাতে লাইলাতুল কদরের অনুসন্ধান কর।" (সহিহ বুখারী- ২০১৭, মুসলিম- ১১৬৯)।
নবী করীম সা: এরশাদ করেন, "আমাকে লাইলাতুল কদর দেখানো হয়েছে, অতঃপর আমাকে তা ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে। অতএব তোমরা শেষ দশ রাতের বেজোড় রাতসমুহে তা খোঁজ করবে"। (বুখারি :৭০৯)
তিনি বলেন, আমি উবাই ইবনু কা’ব (রাঃ)-কে বললাম, আপনার ভাই ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস’উদ (রাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি গোটা বছর রাত জাগরণ করে- সে কদরের রাতের সন্ধান পাবে। তিনি (উবাই) বললেন, আল্লাহ তাকে রহম করুন, এর দ্বারা তিনি এ কথা বুঝাতে চাচ্ছেন যে, লোকেরা যেন কেবল একটি রাতের উপর ভরসা করে বসে না থাকে। অথচ তিনি অবশ্যই জানেন যে, তা রমাদান মাসে শেষের দশ দিনের মধ্যে এবং ২৭ তম রজনী। অতঃপর তিনি দৃঢ় শপথ করে বললেন, তা ২৭ তম রজনী। আমি (যির) বললাম, হে আবুল মুনযির! আপনি কিসের ভিত্তিতে তা বলেছেন? তিনি বললেন, বিভিন্ন আলামত ও নিদর্শনের ভিত্তিতে-যে সম্পর্কে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে অবহিত করেছেন। যেমন, সেদিন সূর্য উদয় হবে। কিন্তু তাতে আলোকরশ্নি থাকবে না। (সহিহ মুসলিম- ২৬৬৭)
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (রমাযানের) মাঝের দশকে ই’তিকাফ করেন। অতঃপর ২০ তম দিন অতিবাহিত হবার পর এবং ২১ তম দিনের সূচনাতে তিনি নিজ বাসস্থানে ফিরে আসেন এবং তাঁর সঙ্গে যারা ই’তিকাফ করেন, তারাও নিজ নিজ আবাসে প্রত্যাবর্তন করেন। অতঃপর একবার রমাযান মাসের মাঝের দশকে তিনি ই’তিকাফ করলেন- যে রাতে তাঁর ই’তিকাফ হতে ফিরে আসার কথা, সে রাতে (পুনরায়) ই’তিকাফ আরম্ভ করলেন ও লোকদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিলেন এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিলেন। এরপর তিনি বললেন, আমি সাধারণত এ (মধ্যম) দশকে ই’তিকাফ করতাম। এরপর শেষ দশকেও ই’তিকাফ করা আমার কাছে সমীচীন মনে হল। অতএব যে ব্যক্তি আমার সাথে ই’তিকাফ করতে চায়, যেন নিজ ই’তিকাফের স্থানে অবস্থান করে। আমি এ (কদরের) রাত স্বপ্নে দেখেছিলাম, কিন্তু আমাকে তা ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে। অতএব তোমরা শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোতে তা অনুসন্ধান কর। আমি স্বপ্নে নিজেকে পানি ও কাদার মধ্যে সাজ্দাহ্ করতে দেখেছি। আবূ সা’ঈদ আল খুদরী (রাঃ) বলেন, ২১ তম রাতে আমাদের উপর বৃষ্টি বর্ষিত হয়। তিনি যখন ফজরের সলাত থেকে ফিরলেন, তখন আমি তাঁর মুখমণ্ডল কাদা ও পানিতে সিক্ত দেখলাম। (সহিহ মুসলিম- ২৬৫৯)
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আমাকে কদরের রাত দেখানো হয়েছিল। অতঃপর তা ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে। আমাকে ঐ রাতের ভোর সম্পর্কে স্বপ্ন আরও দেখানো হয়েছে যে, আমি পানি ও কাদার মধ্যে সাজদাহ করছি। রাবী বলেন, অতএব ২৩ তম রাতে বৃষ্টি হ’ল এবং রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের সাথে (ফজরের) সলাত আদায় করে যখন ফিরলেন, তখন আমরা তাঁর কপাল ও নাকের ডগায় কাদা ও পানির চিহ্ন দেখতে পেলাম। রাবী ‘আবদুল্লাহ ইবনু উনায়স (রাঃ) বলতেন, তা ছিল ২৩ তম। (সহিহ মুসলিম- ২৬৬৫)
উচ্চারণ : 'রাব্বিগফির ওয়ারহাম ওয়া আংতা খাইরুর রাহিমিন।'
অর্থ : ‘হে আমার প্রভু! (আমাকে) ক্ষমা করুন এবং (আমার উপর) রহম করুন; আপনিই তো সর্বশ্রেষ্ঠ রহমকারী।' (সুরা মুমিনুন : আয়াত ১১৮)
رَبَّنَا آمَنَّا فَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا وَأَنتَ خَيْرُ الرَّاحِمِينَ
উচ্চারণ : 'রাব্বানা আমান্না ফাগফিরলানা ওয়ারহামনা ওয়া আংতা খাইরুর রাহিমিন।'
অর্থ : 'হে আমাদের পালনকর্তা! আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি। অতএব তুমি আমাদেরকে ক্ষমা কর ও আমাদের প্রতি রহম কর। তুমি তো দয়ালুদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ দয়ালু।' (সুরা মুমিনুন : আয়াত ১০৯)
رَبِّ إِنِّيْ ظَلَمْتُ نَفْسِيْ فَاغْفِرْ لِيْ
উচ্চারণ : 'রাব্বি ইন্নি জ্বালামতু নাফসি ফাগফিরলি।'
অর্থ : '(হে আমার) প্রভু! নিশ্চয়ই আমি নিজের উপর জুলুম করে ফেলেছি, অতএব আপনি আমাকে ক্ষমা করুন।' (সুরা কাসাস : আয়াত ১৬)
رَبَّنَا إِنَّنَا آمَنَّا فَاغْفِرْ لَنَا ذُنُوْبَنَا وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ
উচ্চারণ : 'রাব্বানা ইন্নানা আমান্না ফাগফিরলানা জুনুবানা ওয়া ক্বিনা আজাবান নার।'
অর্থ : হে আমাদের রব! নিশ্চয়ই আমরা ঈমান এনেছি, সুতরাং তুমি আমাদের গোনাহ ক্ষমা করে দাও এবং আমাদেরকে জাহান্নামের আযাব থেকে রক্ষা কর।' (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৬)
رَبَّنَا اصْرِفْ عَنَّا عَذَابَ جَهَنَّمَ ۖ إِنَّ عَذَابَهَا كَانَ غَرَامًا
উচ্চারণ : রাব্বানাস্বরিফ ‘আন্না ‘আযাবা জাহান্নাম, ইন্নাঁ ‘আযাবাহা কানা গ্বরামা।
অর্থ : “হে আমার পালনকর্তা, আমাদের কাছ থেকে জাহান্নামের শাস্তি হঠিয়ে দাও। নিশ্চয় এর শাস্তি নিশ্চিত বিনাশ। (সূরা আল ফুরক্বান- ৬৫)
رَبَّنَا لَا تُزِغْ قُلُوبَنَا بَعْدَ إِذْ هَدَيْتَنَا وَهَبْ لَنَا مِن لَّدُنكَ رَحْمَةً ۚ إِنَّكَ أَنتَ الْوَهَّابُ
উচ্চারণ : রাব্বানা লা তুজিগ ক্বুলুবানা বা’দা ইয হাদায়তানা ও হাবলানা মিল্লাদুনকা রাহমাহ,ইন্নাকা আনতাল ওহ্হাব।
অর্থ : “হে আমাদের পালনকর্তা ! সরল পথ প্রদর্শনের পর তুমি আমাদের অন্তরকে ফিরিয়ে দিওনা এবং তোমার নিকট থেকে আমাদিগকে অনুগ্রহ দান কর। তুমিই সব কিছুর দাতা। (সূরা আল-ইমরান-০৮)