সুফি সুন্নীদের শয়তান সম্পর্কিত আকিদার জবাব
সুফি সুন্নীরা ইসলামের শরিয়ত সম্পর্কে এমন এমন সব আকিদা পোষণ করে যা কখনোই ইসলাম স্বীকৃত নয়। এইসব ভ্রান্ত আকিদা সমূহ এমন যে, তা একজন ঈমানদারকে মুশরিকে পরিনত করে ঈমান হারা করে দেয়। এখন আমরা কুরআন এবং সহীহ্ হাদিসের আলোকে সুফি সুন্নীদের শয়তান সম্পর্কিত আকিদার জবাব পাওয়ার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।।
শয়তানের দ্বারা উপকৃত
সুফীদের বিভিন্ন দলের লেখনী থেকে জানা যায় যে, তারা শয়তানের কাছ থেকেও বিভিন্ন বিষয়ে দিক নির্দেশনা পেয়ে থাকেন। অর্থাৎ তাদের আকিদা হলো শয়তানের দ্বারাও মানুষের লাভ হয় এবং শয়তানও মানুষের উপকার করে।
আরও পড়ুন শিরক কী? মানুষ কীভাবে শিরক করে
তাবলিগী নিসাব ফাযায়েলে আমাল বইয়ে হজরত জুনাইদ (রঃ) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি একবার শয়তানকে উলঙ্গ অবস্থায় দেখে জিজ্ঞাসা করলেন, "মানুষের সামনে উলঙ্গ হয়ে থাকতে তোর কি লজ্জা হয় না? শয়তান তখন বলল, এরা কি মানুষ? মানুষ তো তারা, যারা শোনিযিয়ার মসজিদে বসে আছেন। যারা আমার শরীরকে দুর্বল করেছে, আমার কলিজাকে পুড়িয়ে কাবাব করে দিয়েছে। হজরত জুনাইদ (রহঃ) বলেন, আমি শোনিজিয়ার মসজিদে গিয়া দেখি কয়েকজন বুযুর্গ হাঁটুর উপর মাথা রাখিয়া মোরাকাবায় মশগুল রয়েছেন। তাঁরা আমাকে দেখে বলতে লাগলেন, খবীস শয়তানের কথায় কখনও ধোকায় পড়ো না।
মাসূহী (রহঃ) থেকেও অনুরূপ বর্ণনা করা হয়েছে যে, তিনি শয়তানকে উলঙ্গ দেখে জিজ্ঞাসা করলেন, "মানুষের মধ্যে এইভাবে উলঙ্গ হয়ে চলাফেরা করতে তোর লজ্জা হয় না? সে বলতে লাগলো, খোদার কসম, এরা তো মানুষ নয়। যদি মানুষ হতো তবে এদের সাথে আমি এমনভাবে খেলা করতাম না, যেমন বাচ্চারা ফুটবল নিয়ে খেলা করে। মানুষ ঐ সমস্ত লোক, যারা আমাকে অসুস্থ করে দিয়াছে। এই কথা বলে সে সুফিয়ায়ে কেরামের জামাতের দিকে ইশারা করল।" (ফাযায়েলে আমাল, দ্বিতীয় খন্ড, ৩৭৬-৩৭৭ পৃষ্ঠা, দারুল কিতাব, বাংলাবাজার, ঢাকা-১১০০ থেকে ২০০১ সালে প্রথম প্রকাশিত)
আল্লাহ্ কতৃক চিরন্তন সত্য যে, শয়তান হচ্ছে মানব জাতির প্রকাশ্য শত্রু। সে সর্বদা মানুষকে ঈমান থেকে বিচ্যুত করে গোমরাহীর দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য অবিরাম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং যাবে । সে আল্লাহর সাথে এ ব্যাপারে চ্যালেঞ্জ করেছে। তার কথা আল্লাহ্ তাআলা কুরআনে উল্লেখ করেছেন। আল্লাহ্ তাআলা বলেন, "সে বললঃ আপনি আমাকে যেমন উদ্ভ্রান্ত করেছেন, আমিও অবশ্য তাদের জন্যে আপনার সরল পথে বসে থাকবো। এরপর তাদের কাছে আসব তাদের সামনের দিক থেকে, পেছন দিক থেকে, ডান দিক থেকে এবং বামদিক থেকে। আপনি তাদের অধিকাংশকে কৃতজ্ঞ পাবেন না।" (সূরা আরাফঃ ১৬-১৭)
এতে সহজেই বুঝা যায় একজন মানুষ কতটুকু গোমরাহী হলে ইবলীস শয়তানকে সঠিক দিক নির্দেশক ও পরামর্শ দাতা হিসেবে বিশ্বাস করতে পারে। আর সুফিবাদীরা আল্লাহ্ দ্রোহী পাপিষ্ঠ ইবলীস শয়তানকেই তাদের গুরু মনে করে থাকেন। সুতরাং যারা শয়তানের অনুসারী তারা কখনোই সঠিক হতে পারে না। তাই সুফি সুন্নীদের সুফিবাদ একটি ভ্রান্ত মতবাদ। ইসলামের সাথে এর কোনো সম্পর্ক নেই।
আরও পড়ুন সুফিবাদ কী, কীভাবে উৎপত্তি এবং বর্তমান অবস্থা
কৃতজ্ঞতাঃ
মোহাম্মাদ ইস্রাফিল হোসাইন। (বিএ ইন আরবি সাহিত্য ও ইসলাম শিক্ষা)
সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী
১০ মার্চ, ২০২২
পতেঙ্গা, চট্টগ্রাম।