সুফি সুন্নীদের বৈরাগ্যবাদ সম্পর্কিত আকিদার জবাব
সুফি সুন্নীরা ইসলামের শরিয়ত সম্পর্কে এমন এমন সব আকিদা পোষণ করে যা কখনোই ইসলাম স্বীকৃত নয়। এইসব ভ্রান্ত আকিদা সমূহ এমন যে, তা একজন ঈমানদারকে মুশরিকে পরিনত করে ঈমান হারা করে দেয়। এখন আমরা কুরআন এবং সহীহ্ হাদিসের আলোকে সুফি সুন্নীদের বৈরাগ্যবাদ সম্পর্কিত আকিদার জবাব পাওয়ার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।
বৈরাগ্যবাদ
সুফিদের মূল আকিদা ছিলো বৈরাগ্যবাদ। অর্থাৎ সুফিদের উৎপত্তির প্রাথমিক পর্যায় ছিলো বৈরাগ্যবাদ বা সন্ন্যাসীবাদ। আমরা জানি যে বৈরাগ্য মানে সংসারত্যাগী। অর্থাৎ যারা জৈবিক ও সামাজিক চাহিদা পূরণ না করার জন্য বিয়ে শাদী করে না। বা বিয়ে শাদী করলেও তা ছেড়ে নিরুদ্দেশ হয়ে জীবনযাপন করা। তাদেরকে বলা বৈরাগী। আর এই জীবনযাপন করাকে বলা হয় বৈরাগ্যবাদ। যা শুরু করেছিল খ্রীস্টান পাদ্রীরা। এখন কথা হচ্ছে, এই বৈরাগ্যবাদ কি ইসলাম সমর্থন করে? পবিত্র কুরআনে আল্লাহ্ বলেন, "কিন্তু সন্ন্যাসবাদ এটা তো তারা নিজেরা প্রবর্তন করেছিল, আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের বিধান ছাড়া আমি তাদেরকে এ (সন্ন্যাসবাদে)র বিধান দেইনি; অথচ এটাও তারা যথাযথভাবে পালন করেনি।" (আল হাদীদ : ২৭)
উপরোক্ত আয়াতটি খ্রিস্টানদের জন্য অবতীর্ণ হয়েছিল। যেখানে আল্লাহ্ সুস্পষ্ট করে তাদের উদ্ভাবিত সন্ন্যাসবাদকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। অর্থাৎ সংসারত্যাগী বৈরাগ্য জীবনযাপন। কেননা আল্লাহ্ এই বিধান তাদের দেননি। সুতরাং যাদেরকে সন্ন্যাসী হতে নিষেধ করা হয়েছিল।কিন্তু তারা নিজ দায়িত্বে সন্ন্যাসী হয়েছিল। ঠিক একইভাবে ইসলামেও আল্লাহ্ সন্ন্যাসবাদের অনুমতি দেননি। তারপরও সুফিরা বৈরাগী হয়ে সুফিবাদের এখনও প্রচার প্রসার চালিয়ে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন জন্মগত মুসলিম ধর্মমতে মুসলিম
যদি আল্লাহ্ সন্ন্যাসবাদের অনুমতি দিতেন।তাহলে কুরআনে খ্রিস্টানদের সন্ন্যাসবাদ নিয়ে আল্লাহ্ তাদেরকে নিরুৎসাহিত এবং তাদের উপর রাগান্বিতও হতেন না। এই আয়াতে সুস্পষ্টবভাবে সন্ন্যাসবাদকে বাতিল বলে ঘোষণা করা হয়েছে। কেননা এটা আল্লাহর বিধান নয়। শুধু খ্রিস্টানরা নয় অতীতের সকল ধর্মাবলম্বীরা বৈরাগ্যবাদ বা সন্ন্যাসবাদের চর্চা করতো এবং করে।
অতএব যেখানে খ্রিস্টানদের বৈরাগ্যবাদের জন্য তাদেরকে কুরআনে তিরস্কার করা হচ্ছে। সেখানে ইসলামে অনুমতি না থাকা সত্ত্বেও কীভাবে সুফিবাদের বৈরাগ্যকে ইসলাম বলা যায়? কেননা এই বৈরাগ্যবাদ আল্লাহর রাসুল প্রতিষ্ঠিত করে যাননি। এই সন্ন্যাসবাদ রাসুল পরবর্তীতে অনেক শত বছর পরে প্রতিষ্ঠিত। অথচ আল্লাহ্ পবিত্র কুরআনে বলেন, "আজ তোমাদের জন্য তোমাদের ধর্ম (ইসলাম) পূর্ণাঙ্গ করলাম ও তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের ধর্ম হিসাবে মনোনীত করলাম। "( সূরা মায়িদাহ : ৩)
অর্থাৎ দ্বীন ইসলাম পরিপূর্ণরূপে প্রতিষ্ঠিত। এই দ্বীন ইসলামে রাসুল পরবর্তী নতুন কোনো কিছুই সংযুক্ত করা যাবে না। সুতরাং সুফিদের নব্য মতবাদ সংসার বিমুখী বৈরাগীবাদ কখনোই ইসলামের অন্তর্ভূক্ত নয়।
আরও পড়ুন পূর্বপুরুষদের অন্ধ অনুসরণ
কৃতজ্ঞতাঃ
মোহাম্মাদ ইস্রাফিল হোসাইন। (বিএ ইন আরবি সাহিত্য ও ইসলাম শিক্ষা)
সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী
১০ মার্চ, ২০২২
পতেঙ্গা, চট্টগ্রাম।