সুফি সুন্নীদের শরীয়ত সম্পর্কিত আকিদার জবাব
সুফি সুন্নীরা ইসলামের শরিয়ত সম্পর্কে এমন এমন সব আকিদা পোষণ করে যা কখনোই ইসলাম স্বীকৃত নয়। এইসব ভ্রান্ত আকিদা সমূহ এমন যে, তা একজন ঈমানদারকে মুশরিকে পরিনত করে ঈমান হারা করে দেয়। এখন আমরা কুরআন এবং সহীহ্ হাদিসের আলোকে সুফি সুন্নীদের শরিয়ত সম্পর্কিত আকিদার জবাব পাওয়ার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।
শরিয়তের নিজস্ব উৎস
ইসলাম একটি পরিপূর্ণ জীবনব্যবস্থা। ইসলামের রয়েছে নিজস্ব শরিয়ত। অথচ সুফিরা ইসলামের শরিয়ত মানে না। সুফিদের রয়েছে নিজস্ব শরীয়তের উৎস যা কখনোই ইসলাম স্বীকৃত নয়। ইসলামে সকল ঈমান আমল আকিদা রাসুল সাঃ কতৃক প্রতিষ্ঠিত। সেখানে নতুন করে কোনো কিছু যোগ বা বাদ দেওয়ার অবকাশ নেই। তারপরও সুফিরা নিজেদের মুসলিম দাবি করলেও ইসলামের শরিয়তে তাদের তৃপ্তি নেই। তাই তারা নিজস্ব পদ্ধতিতে নিজেদের ঈমান আকিদার প্রতিষ্ঠিত করে সুফিবাদ প্রচার প্রসার করে। অথচ আল্লাহ্ বলেন,
"তিনি (আল্লাহ্) তোমাদের জন্য দ্বীনের ক্ষেত্রে সে পথই (শরিয়ত) নির্ধারিত করেছেন, যার আদেশ দিয়েছিলেন নুহকে, যা আমি প্রত্যাদেশ করেছি (ইসলামী শরিয়ত) আপনার প্রতি এবং যার আদেশ দিয়েছিলাম ইবরাহিম, মুসা ও ঈসাকে এই মর্মে যে তোমরা দ্বীনকে প্রতিষ্ঠিত করো এবং অনৈক্য সৃষ্টি করো না।’ (সুরা শুরা, আয়াত : ১৩)
উপরোক্ত আয়াতে আল্লাহ্ স্পষ্টই ঘোষণা দিচ্ছেন যে, প্রতিটি নবী রাসুলদের জাতির জন্য বিভিন্ন শরিয়ত আল্লাহ্ নির্ধারণ করেছিলেন। ঠিক অনুরূপ হযরত মুহাম্মদ সাঃকেও আল্লাহ্ নির্দিষ্ট শরিয়ত দিয়েছেন। এবং প্রতিটি মুসলমানকে ইসলামী শরীয়তেরই অনুসরণ করতে হবে। আল্লাহ্ বলেন,
"তারপর আমি তোমাকে দীনের এক বিশেষ বিধানের উপর প্রতিষ্ঠিত করেছি। সুতরাং তুমি তার অনুসরণ কর এবং যারা জানে না তাদের খেয়াল- খুশীর অনুসরণ করো না।" (আল জাসিয়াহ ৪৫:১৮)
উপরোক্ত আয়াতটি রাসুল সাঃকে উদ্দেশ্য করে সমগ্র মুসলিম জাতির জন্য আল্লাহ্ বলছেন যে, মুসলমানদের একটি নির্দিষ্ট বিধিবিধান বা শরিয়ত তিনি নির্ধারিত এবং প্রতিষ্ঠিত করে দিয়েছেন। সুতরাং রাসুলসহ সকলকে সেই শরীয়তের অনুসরণে চলতে হবে। আল্লাহ্ প্রেরিত শরিয়ত ছাড়া অন্য কোনো বিধি বিধান বা শরিয়ত আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। কেননা তিনি ইসলামকে পরিপূর্ণ করেই প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এবং সেইসাথে ইসলামকে দ্বীন হিসাবে মনোনীত করেছেন। আল্লাহ্ বলেন,
"নিঃসন্দেহে ইসলামই আল্লাহর একমাত্র মনোনীত দ্বীন।" (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৯)
অন্য আয়াতে বলেন,
"আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণ করলাম এবং তোমাদের উপর আমার নিআমত সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্য দ্বীন হিসেবে পছন্দ করলাম।" ( আল মায়িদাহ ৫:৩)
উপরোক্ত আয়াত গুলো পর্যবেক্ষণ করলে এটা স্পষ্ট হবে যে, দ্বীন ইসলামকে আল্লাহর কাছে একমাত্র গ্রহণযোগ্য ধর্ম হিসাবে মনোনীত করেছেন। সেইসাথে তিনি ইসলামকে পরিপূর্ণ করে দিয়েছেন। যেখানে আর নতুন করে কোনো কিছু সংযোজন বিয়োজন করা যাবে না। সুতরাং সুফিরা নিজস্ব শরীয়তের উৎস দ্বারা নিত্যনতুন যে ঈমান আমল আকিদা তৈরি করে তা কখনোই আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। কেননা আল্লাহ্ বলেন,
"আর যে ইসলাম ছাড়া অন্য কোন দ্বীন চায় তবে তার কাছ থেকে তা কখনো গ্রহণ করা হবে না এবং সে আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে। (আল ইমরান ৩:৮৫)
অর্থাৎ ইসলাম ছাড়া কোনো ধর্মই গ্রহণযোগ্য নয়। আর সেই ইসলামই গ্রহণ করা হবে যে ইসলাম আল্লাহ্ তাঁর রাসুলের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত করে গেছেন। সুতরাং রাসুল পরবর্তী ইসলামে নতুন কোনো শরীয়তের সুযোগ নেই। অতএব সুফিরা শরীয়তের যেসব নতুন নতুন উৎস দাবি করে এবং সেইমতে দ্বীনে নতুন কিছু যোগ বিয়োগ করে পালন করে তা আল্লাহর কাছে সরাসরি অগ্রহণযোগ্য।
আরও পড়ুন রাসুলুল্লাহ সাঃএর আদর্শ এবং অনুসরণই হচ্ছে ইসলাম
শরীয়তের অনুসারীদের ঠাট্টা বিদ্রুপ
সুফিদের বাউল, ভান্ডারীসহ অন্যান্য সম্প্রদায় যারা নাচ গানে আল্লাহ্কে সন্তুষ্ট করে। তারা তাদের গান কবিতা বাদ্য বাজনা দ্বারা প্রমাণিত করে শরীয়তের যারা আলেম তারা কিছুই জানে না। কিতাবের জ্ঞান কোনো জ্ঞান নয়। পীর আউলিয়াদের জ্ঞানই প্রকৃত আল্লাহর জ্ঞান। তারা তাদের আচরণে সুস্পষ্টভাবে শরীয়তের বিভিন্ন মাসালা মাসায়েল নিয়ে সরাসরি ঠাট্টা বিদ্রুপ করে। তাদের দাবি যারা সালাত আদায় করে তাদের সালাত শুদ্ধ নয়। কেননা তারা তো আল্লাহ্কে দেখে না। সালাত আদায় করতে হবে আল্লাহ্কে দেখে দেখে।
শুধু সালাত নয়, তারা মক্কায় গিয়ে তাওয়াফ করাকেও অপছন্দ করে। তাদের মতে সেখানে তো আল্লাহ্ নেই! যেখানে আল্লাহ্ থাকে সেখানেই তাঁকে তাওয়াফ করলে আসল হজ্জ্ব পালন হবে। তাই তারা পীরের আস্তানায় অলি আউলিয়াদের কবর বা আসন ইত্যাদিকে তাওয়াফ করে পূন্য লাভ করে। যা সুস্পষ্ট শির্কি কুফরি আকিদা।
সুফিরা ইসলামের পাঁচ ওয়াক্ত সালাতকে তাদের হিসাবে ধরে না। এগুলো তাদের জন্য অতিরিক্ত। অর্থাৎ নফল সালাতের মতো। সুফিদের মতে তাদের পীর আউলিয়ারা যা যা করতে বলে সেই সালাতই আসল। মোটকথা শরীয়তের হুকুম আহকামের প্রতি সুফিদের আগ্রহ নেই। বরং তারা এইসব যারা করে তাদের নিয়ে ঠাট্টা তামাশা করে বিভিন্ন গানে ও ওয়াজ মাহফিলে। তাদের এইসব কর্মকান্ড সুফিদের প্রকৃত ইসলাম থেকে খারিজ করে দেয়।
এইসব ছাড়াও বাউলসহ সুফিদের অন্যান্য সম্প্রদায়রা শরীয়ত নিয়ে বিভিন্ন অসাড় কথাবার্তা বলে থাকে। এইসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোঃ
"মসজিদের হুজুররা ১৩০০ টাকা বেতনের চাকরি করে আজান দেয়। সেই টাকা দিয়ে সংসার চালায়। বানরের মত চুক্কা টুপি মাথায় দিয়া ঘুরে, আর শালারা বলে হারাম হারাম। "
"যারা নামায পড়ে সেজদা দিয়া কপালে কালো দাগ করে, তাদের কপাল থেকে ১১৩টি কিড়া বের হয়। নামায পড়ে যে নূর হয়, সেইগুলি হুজুরদের পায়ুপথে বের হয়"।
"নবীই আল্লাহ, আল্লাহই নবী, যেই মুরশেদ- সেই রসুল এই কথাতে নেই কোন ভুল বলেন- লালন ফকির”
“২৩ প্রকার বাদ্যযন্ত্র বাজানো জায়েয।”
“বিদআত খারাপ জিনিস না। হুজুররা বলে বিদআত করা যাবে না। তাই যারে তারে হুজুর বলা যাবে না।”
“সূফী পীর অন্তর্যামী”
“খাজা বাবা আল্লাহ, নবী, বেহেশত, দোযখ সব দেখছেন”
“নবী নিজেই আল্লাহ, তিনি বলেছেন, ‘যে আমারে দেখছে তার আল্লাহ দেখার বাকি নাই’।”
“আর সেই নবীরে কয় মাটির নবী এইগুলারে(হুজুরদের) আপনারা রাখেন কেন? সবার আগে পীর ধরতে হবে, মুরীদ হইতে হবে।”
“গান-বাজনা করবেন, পক্ষে থাকবেন, পীর না ধরলে মুসলিম হইতে পারবেন না”
“নবী গান না শুনে ঘুমাইতোই না। আবু মূসাকে তিনি বললেন, তুমি কাওয়ালি গাও, শামা গাও। দাঊদের যন্ত্রগুলা তোমারে দিলাম।”
“দাঊদ নবী বাঁশি না বাজাইলে হাশর শুরুই হবে না। সূরা সাবার ৯ নং আয়াতে এ কথা আছে। উনি নবী না বয়াতি।”
“বাবা-মায়ের পায়ে চুম্বন, সিজদাহ করা জায়েয”
“আল্লাহকে সিজদাহ দিও না, আল্লাহ তোমার সিজদার মালিক না, সিজদাহ দিও তোমার গুরুকে, গুরুর সিজদাহ ফরয এ কেফায়া, ডবল ফরয” (কৃতজ্ঞতা মুরসালিন নিলয়)
" আদমের ভিতর ঢুকে আমার খোদা সিজদা লয়,
আদমকে সিজদা করলে কাফেররা শিরক কয় "
আরও পড়ুন বিদআত কী এবং এর পরিনাম
উপরোক্ত অসাড় কথাবার্তা দ্বারা সুফিদের অধিকাংশ গোষ্ঠী সাধারণ মানুষদের শরিয়ত নিয়ে বিভ্রান্ত করে। তাদের এহেন কর্মকান্ড ইসলামে সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য। কেউ এইসব দাবি করার সাথে সাথে তার ঈমান নষ্ট হয়ে যাবে। আল্লাহ্ বলেন, "আর যদি তুমি তাদেরকে প্রশ্ন কর, অবশ্যই তারা বলবে, ‘আমরা আলাপচারিতা ও খেল-তামাশা করছিলাম। বল, ‘আল্লাহ, তাঁর আয়াতসমূহ ও তাঁর রাসূলের সাথে তোমরা বিদ্রূপ করছিলে’?"[ আত তাওবাহ্ ৯:৬৫]
"তোমরা ওযর পেশ করো না। তোমরা তোমাদের ঈমানের পর অবশ্যই কুফরী করেছ। যদি আমি তোমাদের থেকে একটি দলকে ক্ষমা করে দেই, তবে অপর দলকে আযাব দেব। কারণ, তারা হচ্ছে অপরাধী।[ আত তাওবাহ্ ৯:৬৬ ]
উপরোক্ত আয়াত দ্বারা আল্লাহ্ স্পষ্ট করে দিলেন যে, আল্লাহ্ এবং আল্লাহর রাসুলের আনীত কুরআন তথা দ্বীন নিয়ে কেউ যদি খেল, তামাশা, বিদ্রুপ, মজা ইত্যাদি করে তাহলে তার ঈমান চলে যাবে। অর্থাৎ শরীয়তের বিধি বিধান ইত্যাদিকে কম গুরুত্বপূর্ণ মনে করে খেল তামাশা ঠাট্টা বিদ্রুপ করা। সুতরাং সুফিদের এই আকিদাও সম্পূর্ণ ইসলাম বিরোধী।
আরও পড়ুন সুফিবাদ কী, কীভাবে উৎপত্তি এবং বর্তমান অবস্থা
বিভিন্ন ত্বরিকার সৃষ্টি
সুফিরা আল্লাহ্কে রাজি খুশি করার জন্য অর্থাৎ আল্লাহর পরিপূর্ণ ইবাদত করার জন্য বিভিন্ন ত্বরিকা বা পথ সৃষ্টি করেছে। তাদের মতে ১২৬ থেকে ১৪৮টি ত্বরিকা রয়েছে। যেকেউ এইসব ত্বরিকার যেকোনো একটি অনুসরণ করলেই আল্লাহ্ খুশি হয়ে যাবেন। এছাড়াও সুফিদের রয়েছে সর্টকাট ত্বরিকা। যে ত্বরিকা হাক্কানী পীর চরমোনাইরা অনুসরণ করে। সেটা হচ্ছে চিশতীয়া সাবেরীয়া ত্বরিকা।
আমরা যদি কুরআন সুন্নাহর দিকে আলোকপাত করি, তাহলে দেখতে পাবো যে আল্লাহ্ শুধুমাত্র কেবলমাত্র একটি ত্বরিকাই সৃষ্টি করেছেন। যা রাসুলুল্লাহ সাঃ দ্বারা তাঁর বান্দাদের শিখিয়েছেন। আর সেটা হচ্ছে ইসলাম। আল্লাহ্ পবিত্র কুরআনে বলেন,
"তোমরা সকলে আল্লাহর রশি (ইসলাম বা কুরআন) কে শক্ত করে ধর এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না "। (আলে ইমরান -১০৩ )
উপরোক্ত আয়াতে আল্লাহ্ স্পষ্ট করে নির্দেশ দিয়েছেন যে, শুধুমাত্র আল্লাহর রশি তথা ইসলাম অর্থাৎ কুরআনকে আঁকড়ে ধরো। এবং একে অন্য থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ো না। আল্লাহ্ আরো বলেন,
“হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর এবং রাসুলের অনুসরণ কর, আর তোমাদের আমলগুলি ধ্বংস করো না।” (সূরা মুহাম্মদ- ৩৩)
“রাসূল তোমাদেরকে যা প্রদান করেন তা গ্রহণ কর, যা প্রদান করেন নি তা থেকে বিরত থাক।” (সূরা হাশরঃ ৭)
উপরোক্ত আয়াত দ্বারা এটা স্পষ্ট হয়ে গেলো যে, আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসুলেরই আনুগত্য করতে হবে মানতে হবে। রাসুলের দেখানো পথ বা ত্বরিকা ছাড়া অন্য কারো পথ বা ত্বরিকায় আল্লাহ্কে সন্তুষ্ট করা যাবে না। অথচ সুফিদের রয়েছে অসংখ্য ত্বরিকা যা আগেই উল্লেখ করেছি। তাহলে এতগুলো ত্বরিকা কি আল্লাহ্ দিয়েছেন নাকি রাসুল দিয়েছেন? আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসুল কি এইসব মেনে নিবেন? আল্লাহ্ কুরআনে বলেন,
“তাঁর (আল্লাহর) দিকে রুজু হও, আল্লাহকে ভয় কর, সালাত ক্বায়েম কর, আর সেই মুশরিকদের মধ্যে সামিল হয়ো না, যারা নিজেদের দ্বীনকে খন্ড খন্ড করে বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়েছে এবং প্রত্যেক দলই নিজেরটা নিয়েই সন্তুষ্ট।” (সূরা রুম- ৩১, ৩২)
এই আয়াতে আল্লাহ্ বলছেন, যারা নিজেদের দ্বীনকে বিভিন্ন দলে উপদলে খন্ড খন্ড করে বিভক্ত করেছে তাদের সাথে সামিল হয়ো না। অর্থাৎ তোমরা নিজেদের ধর্ম ইসলামকে খন্ড বিখন্ড করে বিভিন্ন পথ পদ্ধতি বা বিভিন্ন ত্বরিকায় বিভক্ত হয়ো না। আল্লাহ্ আরো বলেন,
“তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে তোমাদের প্রতি যা নাযিল করা হয়েছে তার আনুগত্য কর। তাঁকে ছাড়া আর কোন অলিদের আনুগত্য করো না। তোমরা কম লোকই উপদেশ গ্রহণ কর।” (সুরা আ’রাফ- ৩)
এই আয়াতে আল্লাহ্ সুস্পষ্ট করে বলছেন, আল্লাহ্ যা তাঁর রাসুলের মাধ্যমে পাঠিয়েছেন তার উপরই আনুগত্য করতে হবে। আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসুল ছাড়া অন্য "অলিদের " বা অভিভাবকদের অনুসরণ করা যাবে না। অথচ সুফিদের অসংখ্য অলিরা অসংখ্য ত্বরিকা সৃষ্টি করে গেছেন। এক এক ত্বরিকা এক এক রকম। যেখানে আল্লাহ্ তাঁর রাসুল ব্যতীত সকল অলিদের আনুগত্য করা নিষেধ করেছেন। সেখানে সুফিরা অলিদের দেওয়া ত্বরিকা নিয়ে আল্লাহ্ সন্তুষ্ট করতে চায়। তাদের জন্য আল্লাহ্ বলেন,
“যারা নিজেদের দ্বীনকে খন্ড খন্ড করে বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়েছে তাদের সাথে আপনার (হে রাসূল) কোন সম্পর্ক নেই।” (সূরা আনআম-১৫৯)
আরও পড়ুন ওয়াসীলাহ্ নিয়ে ভ্রান্তি
অর্থাৎ ইসলামের নামে এইসব বিভিন্ন ত্বরিকা সৃষ্টিকারীদের সাথে রাসুলুল্লাহর সাঃএর কোনো সম্পর্ক নেই। আল্লাহ্ তাদের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে বলেন,
“তোমরা তাদের মত হয়ো না, যারা তাদের নিকট স্পষ্ট নিদর্শন আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে এবং নিজেদের মধ্যে মতান্তর সৃষ্টি করেছে। তাদের জন্য রয়েছে মহা শাস্তি।” (সূরা আল-ইমরান- ১০৫)
অর্থাৎ যারা রাসুলুল্লাহর ত্বরিকা ছেড়ে বিভিন্ন মতে ও দলে বিভেদ সৃষ্টি করে আলাদা হয়ে গেছে তাদের জন্য রয়েছে আল্লাহর পক্ষ থেকে মহা শাস্তি।
উপরোক্ত আলোচনা থেকে দলিলের সাহায্যে প্রমাণিত যে, ইসলামের শরিয়ত এক এবং অপরিবর্তনীয়। শরিয়তের নামে ইসলামে নতুন নতুন ইবাদত আমল (বিদআত) আকিদা সৃষ্টি করা যাবে না। যারা আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসুল প্রদত্ত শরিয়তের পরিবর্তে নিজেদের খেয়াল খুশির শরিয়ত পালন করবে, তাদেরকে আল্লাহ্ কখনোই গ্রহণ করবেন না। সুতরাং আমাদের উচিত এইসব সুফিবাদী ঈমান আকিদা থেকে দূরে থাকা।
কৃতজ্ঞতাঃ
মোহাম্মাদ ইস্রাফিল হোসাইন। (বিএ ইন আরবি সাহিত্য ও ইসলাম শিক্ষা)
সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী
২২ জানুয়ারি, ২০২২
পতেঙ্গা, চট্টগ্রাম।