সুফি সুন্নীদের জান্নাত ও জাহান্নাম সম্পর্কিত আকিদার জবাব
সুফি সুন্নীরা ইসলামের শরিয়ত সম্পর্কে এমন এমন সব আকিদা পোষণ করে যা কখনোই ইসলাম স্বীকৃত নয়। এইসব ভ্রান্ত আকিদা সমূহ এমন যে, তা একজন ঈমানদারকে মুশরিকে পরিনত করে ঈমান হারা করে দেয়। এখন আমরা কুরআন এবং সহীহ্ হাদিসের আলোকে সুফি সুন্নীদের জান্নাত ও জাহান্নাম সম্পর্কিত আকিদার জবাব পাওয়ার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।
আরও পড়ুন মাজারে দান সদকা করার ইসলামী বিধান
জান্নাত জাহান্নামের জন্য ইবাদত নয়
সুফিদের আরেকটি ভ্রান্ত আকিদা হচ্ছে জান্নাতের আশায় এবং জাহান্নামের ভয়ে ইবাদত করা যাবে না। যদি কেউ এই দুটির জন্য ইবাদত করে তাহলে তা হবে শিরক! কিন্তু দাবিটি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। আমরা এই বিষয়ে একটি উদাহরণের সাহায্যে বুঝার চেষ্টা করি।
দুনিয়ায় আমরা কম বেশী সবাই কারো না কারো অধীনে কাজ করি বা করতে হয়। ধরে নিলাম আমরা একজন ক্ষমতাবান বসের নিয়ন্ত্রণে কাজ করি। দুনিয়ার রীতি অনুসারে বসকে সবাই ভয় পাওয়ার কথা। কীসের ভয়? চাকরি চলে যাওয়া প্রমোশন, ডিমোশন, বিভিন্ন সুযোগসুবিধা পাওয়া না পাওয়ার ভয়।
সুতরাং এখন যেকেউ চাইবে বসকে কাজ দিয়ে হোক, কথা দিয়ে হোক তোষামোদি করে হোক, যেকোনো উপায়ে সন্তুষ্ট করতে। এর কারণ কী? এর কারণ হলো একজন ক্ষমতাশালী বসের কাছে প্রিয় হতে পারলে অবশ্যই সেই বস ঐ কর্মচারীকে প্রোমোশনসহ যাবতীয় সুযোগ সুবিধা দিবেন।
সুতরাং প্রতিটি ব্যক্তিই চাইবে বসকে খুশি করতে। যাতে করে প্রোমোশনসহ অন্যান্য সুবিধা পেতে পারে। এই খুশি করা হতে পারে বসের আদিষ্ট কাজ যথাযথভাবে বুঝিয়ে দেওয়া। সময়ের কাজ সময়ে করা। সেইসাথে নিজের দায়িত্বের বাইরের কাজও করে দেওয়া। যাতে বসের সুনজর পাওয়া যায়।
কেউ যদি বসকে খুশিও করতে নাও চায় তবুও তাকে চটাতে চাইবে না। কেন চটাতে চাইবে না? কারণ, বস যদি কোনো কারণে কারোর উপর অসন্তুষ্ট হয়, তাহলে তার ডিমোশন বা চাকরি চলে যাওয়াসহ সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিতও করতে পারে। অতএব চাকরি চলে যাওয়ার ভয়ে হলেও তাকে তার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে হবে।
এই যে আমরা দুনিয়ার একজন মানুষকে এতো ভয় করছি কেন? বা তাকে আপন করার চেষ্টাও করছি কেন? এই বস কিন্তু কোনো বাঘ ভাল্লুক নয় যে তাকে এতো ভয় পেতে হবে। অথবা তার সাথে আত্মীয়তার সম্পর্কও নেই যে তাকে সেই কারণে ভালোবাসব।
আরও পড়ুন শুধু অলি আউলিয়ারাই আল্লাহর অলি নয়
অতএব তাকে ভয় ও ভালোবাসার মূল কারণ আমরা আগেই জেনেছি। আর তা হচ্ছে প্রোমোশন এবং ডিমোশন ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা। যদি এই দুটোর ভয় বা আশা না থাকতো, তাহলে আমরা কেউ ই তাকে ক্ষমতাশালী মনে করতাম না এবং তাকে ভয় পাওয়া বা সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করতাম না।
সুতরাং এই উদাহরণের দ্বারা আমরা বুঝতে পারলাম যে, ক্ষমতাশালী কাউকে ভয় বা সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্য হলো, তার থেকে ক্ষতি আশংকা বা লাভের আশা করা। অর্থাৎ ক্ষমতাশালী ব্যক্তির নিজস্বতা কিছু নয়। বরং তার দ্বারা ক্ষতি ও লাভের কারণে তাকে ভয় বা ভালোবাসছি।
উপরোক্ত উদাহরণের মতে আমরা আল্লাহর ইবাদতও ঠিক একই কারণে করছি। আমরা আল্লাহ্কে ভালোবাসছি এবং ভয়ও করছি। ভালোবাসার কারণে তাঁর সন্তুষ্টির আশা করছি দুনিয়া এবং আখিরাতে। ঠিক একইভাবে তাকে ভয় করছি দুনিয়া এবং আখিরাতের জন্য। অর্থাৎ তাকে সন্তুষ্ট করে দুনিয়ার শান্তি এবং আখিরাতে জান্নাত পাওয়া। আর জান্নাতের সবচেয়ে বড় নিয়ামত হলো আল্লাহর দর্শন বা তাকে কাছ থেকে দেখা।
এইভাবে তাঁকে ভয় পাওয়ার কারণ হলো দুনিয়ার শাস্তি তথা বিভিন্ন বিপদাপদ থেকে রক্ষা পাওয়া। সেইসাথে আখিরাতের শাস্তি তথা জাহান্নামের আযাব থেকে মুক্তি পাওয়া। এখন সুফিদের যে আকিদা জান্নাত জাহান্নামের চিন্তা করা যাবে না তা কতটুকু যুক্তিযুক্ত? ধরে নিলাম আমাদের জান্নাতেরও চিন্তা নাই জাহান্নামেরও চিন্তা নাই। তাহলে আমরা আল্লাহর ইবাদত করবো কেন? এর উত্তরে সুফিরা বলে, আল্লাহ্কে পাওয়ার জন্য অর্থাৎ আল্লাহর ভালোবাসা পাওয়ার জন্য।
আরও পড়ুন আল্লাহ্কে পেতে মাধ্যম
ধরে নিলাম আমরা আল্লাহর ভালোবাসা পেলাম। এখন আল্লাহ্ আমাদের কী দিবেন? সুফিদের দাবি তিনি তাঁর দেখা দিবেন। খুবই চমৎকার কথা। এখন আমাদের প্রশ্ন তিনি তাঁর দেখা কোথায় দিবেন? দুনিয়ায় নাকি আখিরাতে? এখনই সুফিদের থলের বিড়াল বের হয়ে বলবে যে, আল্লাহর ভালোবাসা পেলে আল্লাহ্ দুনিয়াই তাঁর দেখা বান্দাকে দিবে! অর্থাৎ কুরআন সুন্নাহ বিরোধী যে আকিদা, দুনিয়ায় বসে আল্লাহ্কে দেখা। এটা প্রমাণ করার জন্যই তাদের এই প্রতারণামূলক অসাড় দাবি।
কথাটা এইজন্যই প্রতারণামূলক, কারণ দুনিয়ায় বসে কখনোই আল্লাহ্কে দেখা সম্ভব নয়। যা কুরআন সুন্নাহ দ্বারা আগেই প্রমাণিত হয়েছে। এখন এই কথার মাধ্যমে সেটাকে আরো জোরালো করার ব্যর্থ চেষ্টা সুফিরা করে। যদি তাদের উদ্দেশ্য সৎ হতো তাহলে তাদের দাবির পক্ষে কেউ কোনো আপত্তি করতো না। কারণ, যদি ধরেই নিই যে আল্লাহকে পাওয়া বা দেখার জন্য ইবাদত করতে হবে। তাহলেও কথাটা ভুল নয়।
কেননা বান্দা আল্লাহর ইবাদত করছে তাঁকে দেখার জন্য। আর তাঁর দেখা শুধুমাত্র জান্নাতিরাই পাবেন। তাও আবার শুধুমাত্র জান্নাতে। কুরআন সুন্নাহ দ্বারা প্রমাণিত যে, জান্নাতের সবচেয়ে বড় নিয়ামত হচ্ছে আল্লাহ্কে দেখা। সাধারণ মানুষেরা মনে করে জান্নাত শুধু ভালো খাওয়া পড়ার জায়গায়। এটা একটা ভ্রান্তি। কেননা দুনিয়াতেও যথেষ্ট খাওয়া পড়ার ব্যবস্থা ছিলো। শুধু ছিলো না আল্লাহর দর্শন।
সুতরাং সুফিরা যদি এই হিসাবে তাদের দাবি উত্থাপন করে তাহলে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু তাদের নিয়ত খারাপ। তারা তাদের এই আকিদা দ্বারা এটা প্রমাণ করার চেষ্টা করে যে, তারা তাদের মতো আল্লাহর ইবাদত করে তাঁকে দুনিয়াতে বসেই তারা দেখতে পাচ্ছে। সুতরাং তাদের জান্নাত হাসিল হয়ে গেছে। তাইতো তাদের বিখ্যাত উক্তি হলো, "হে আল্লাহ্ তোমাকে ভালোবাসর জন্য যদি দোজখের আগুনেও জ্বলতে হয় তাহলেও আমি খুশি " এই উক্তিটি একটি স্ববিরোধী কথা। কেননা আল্লাহ্কে ভালবাসলে কখনোই তাকে দোজখে যেতে হবেনা।
আরও পড়ুন ওয়াসীলাহ্ নিয়ে ভ্রান্তি
মোটকথা সুফিরা তাদের ভ্রান্ত আকিদা দুনিয়ায় বসে আল্লাহ্কে দেখা জায়েজ করতেই এমন প্রশ্নের অবতারণা করেছে। আল্লাহর বান্দারা তাঁকে এইজন্যই ভয় এবং ভালোবাসছে যে, তিনি বান্দাকে শাস্তি তথা জাহান্নাম এবং শান্তি তথা জান্নাত দিবেন। এটাই কুরআন সুন্নাহর শিক্ষা। একজন বান্দা অবশ্যই ভয় এবং আশা নিয়ে ইবাদত করবে। আল্লাহ্ পবিত্র কুরআনে বলেন, "তাঁকে (আল্লাহ্কে) ডাকো ভয় ও আশা নিয়ে। নিশ্চয় আল্লাহর রহমত সৎকর্মশীলদের নিকটবর্তী।" (আল আরাফ ৭:৫৬) পবিত্র হাদীসে এসেছে, আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, "তোমরা আল্লাহ্র কাছে চাইলে ফেরদাউস চাইবে। কেননা এটাই হলো সবচেয়ে উত্তম ও সর্বোচ্চ জান্নাত। " (সংক্ষেপিত, সহিহ বুখারী, হাদিস নং ২৭৯০)
পবিত্র কুরআন থেকে এটা সুস্পষ্ট প্রমাণিত যে আল্লাহর ইবাদত করতে হবে অবশ্যই ভয় এবং আশা নিয়ে। সেইসাথে হাদীস দ্বারা প্রমাণিত যে অবশ্যই আল্লাহর কাছে জান্নাত চাইতে হবে। তাও আবার সবচেয়ে উত্তম জান্নাতই আল্লাহর কাছে চাওয়া হচ্ছে সুন্নাত। সুতরাং জাহান্নামের শাস্তির ভয় এবং জান্নাতে আল্লাহর দিদারের আশায় ইবাদত করতে হবে। এই বিষয়ে বিখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ বলেন, "ইবাদত দুইটি মহান বিষয়ের উপর প্রতিষ্ঠিত: ভালবাসা ও সম্মান। আর এ দুইয়ের সমষ্টি হচ্ছে ইবাদত।"
আল্লাহ্ বলেন, “তারা সৎকাজে ঝাঁপিয়ে পড়ত, আর তারা আগ্রহ ও ভীতির সাথে আমাকে ডাকত এবং তারা ছিল আমার কাছে ভীত-অবনত।”[সূরা আম্বিয়া, আয়াত: ৯০]
সুতরাং ভালবাসার মাধ্যমে আগ্রহ তৈরী হয় এবং সম্মানের মাধ্যমে ভয়-ভীতি তৈরী হয়। এ কারণেই তো ইবাদত হচ্ছে- কতগুলো আদেশ ও নিষেধ। নির্দেশগুলোর ভিত্তি হচ্ছে- আগ্রহের উপর এবং নির্দেশকারীর কাছে পৌঁছার অভিপ্রায়ের উপর। আর নিষেধগুলোর ভিত্তি হচ্ছে- সম্মান করা ও সম্মানিত সত্তাকে ভয় করার উপর।
যদি আপনি আল্লাহকে ভালবাসেন তাহলে তাঁর কাছে যা আছে সেটা পাওয়ার জন্য ও তাঁর কাছে পৌঁছার জন্য আপনি আগ্রাহী হবেন, তাঁর কাছে পৌঁছার রাস্তা সন্ধান করবেন এবং পরিপূর্ণভাবে তাঁর আনুগত্য পালন করবেন।
আরও পড়ুন সুফিবাদের শরীয়তের উৎস ও যৌক্তিকতা
আর যদি আপনি আল্লাহকে সম্মান করেন, তাহলে আপনি তাঁকে ভয় করবেন, যখনই কোন গুনাহ করার আকাঙ্ক্ষা মনে জাগবে আপনি স্রষ্টার মহত্ত্ব অনুভব করে সে গুনাহ থেকে বিরত থাকবেন। যেমন আল্লাহ্ বলেন, "নিশ্চয় মহিলা তাকে আকাঙ্ক্ষা করেছিল এবং তিনিও মহিলাকে আকাঙ্ক্ষা করতেন; যদি না তিনিও স্বীয় রবের নিদর্শন দেখতে পেতেন।”[সূরা ইউসূফ, আয়াত: ২৪]
সুতরাং আপনি যদি কোন পাপকাজ করার মনস্থ করেন এবং আল্লাহকে আপনার সামনে ভেবে ভয় পেয়ে যান, ভীত হয়ে পড়েন ও পাপ থেকে দূরে সরে আসেন তাহলে এটি আপনার প্রতি আল্লাহর নেয়ামত। যেহেতু আপনি আগ্রহ ও ভয় দুটোর মাধ্যমে আল্লাহর ইবাদত করতে পারলেন। [শাইখ উছাইমীনের ফতোয়াসমগ্র (৮/১৭, ১৮)]
সুফিদের দাবি তারা আল্লাহ্কে ভালোবাসার জন্য ইবাদত করছে। অর্থাৎ তারা আল্লাহ্কে ভালোবেসে আল্লাহর ভালোবাসা পেতে চায়। এখন আমরা দেখবো আল্লাহর ভালোবাসা পাওয়ার জন্য আল্লাহ্ নিজেই কী শর্ত দিয়েছেন। আল্লাহ্ বলেন, "(হে রাসুল! আপনি) বলুন, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাসতে চাও, তবে আমার অনুসরণ কর; তাহলেই আল্লাহ তোমাদের ভালোবাসবেন এবং তোমাদের গোনাহসমূহ ক্ষমা করে দেবেন। আর আল্লাহ হলেন ক্ষমাশীল দয়ালু।" (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ৩১)
উপরোক্ত আয়াত দ্বারা আল্লাহ্ এটা স্পষ্ট করে বলে দিলেন যে, আল্লাহর ভালোবাসা এবং ক্ষমা পাওয়া একমাত্র শর্ত হলো রাসুলের অনুসরণ। অর্থাৎ যেকেউ আল্লাহ্কে ভালোবাসতে চাইলে তাকে অবশ্যই রাসুলের পরিপূর্ণ অনুসরণ করতে হবে। আল্লাহ্ অন্য আয়াতে বলেন, "তোমাদের জন্য আল্লাহর রসূলের মধ্যে উত্তম আদর্শ রয়েছে যারা আল্লাহ ও শেষ দিনের আশা রাখে আর আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে। "(আল আহযাব :২১)
এই আয়াতে আল্লাহ্ স্পষ্ট করে দিয়েছেন প্রতিটি বান্দার জন্য রাসুলুল্লাহ হচ্ছেন উত্তম আদর্শ। সুতরাং রাসুলুল্লাহ সাঃ যে পদ্ধতিতে আল্লাহ্কে ভালোবাসতে বলেছেন বা যে নিয়তে যে ইবাদত যেকারণে করতে বলেছেন, ঠিক একইভাবে তা তা করতে পারলেই আল্লাহ্ তাঁর ঐ বান্দার উপর খুশি হবেন এবং ভালোবাসবেন। এখন আমরা দেখার চেষ্টা করবো রাসুলুল্লাহ কীভাবে ইবাদত করতে বলেছেন। এবং তিনি তাঁর দোয়াতে কী কী আল্লাহর কাছে চাইতেন।
আরও পড়ুন সুফিবাদ কী, কীভাবে উৎপত্তি এবং বর্তমান অবস্থা
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজেই আল্লাহর কাছে জান্নাত চাইতেন এবং জাহান্নাম থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করতেন। তাঁর সাহাবীবর্গকে জান্নাত চাওয়া ও জাহান্নাম থেকে আশ্রয় প্রার্থনা শিক্ষা দিতেন। এটি সুস্পষ্ট প্রমাণিত সুন্নাহ।এর মধ্যে তাঁরা আল্লাহর মহব্বতের কোন কমতি দেখেননি কিংবা তাদের ইবাদতের মর্যাদাতেও কোন ঘাটতি দেখেননি। আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: "নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সবচেয়ে বেশি দুআ করতেন “হে আল্লাহ! আমাদেরকে দুনিয়াতে কল্যাণ দিন, আখেরাতেও কল্যাণ দিন এবং আমাদেরকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচান।” [সহিহ বুখারী (৬০২৬)]
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি্ ওয়া সাল্লাম এক ব্যক্তিকে বলেন: "আপনি নামাযে কি বলেন? তিনি বলেন: আমি তাশাহুদ পড়ি, এরপর আল্লাহর কাছে জান্নাত প্রার্থনা করি এবং জাহান্নাম থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করি। তবে আমি আপনার চুপিচুপি পাঠ কিংবা মুয়ায (অর্থাৎ ইবনে জাবাল) এর চুপিচুপি পাঠের কিছুই বুঝি না। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি্ ওয়া সাল্লাম বলেন: “আমরাও একই রকম কিছু চুপিসারে পাঠ করি।”[সুনানে আবু দাউদ (৭৯২), সুনানে ইবনে মাজাহ (৩৮৪৭) এবং আলবানি সহিহ ইবনে মাজাহ গ্রন্থ হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন]
উপরোক্ত হাদীস ছাড়াও আরো অসংখ্য হাদীসে এসেছে যে, প্রতিটি মুমিন যেন সকাল সন্ধ্যা আল্লাহর কাছ থেকে জান্নাত প্রার্থনা করে এবং জাহান্নাম থেকে পানাহ চায়। সুতরাং সুফিরা যদি রাসুলুল্লাহর অনুসরণ করতো তাহলে তারাও সকাল সন্ধ্যা জান্নাত লাভ এবং জাহান্নাম থেকে পানাহ চাইত। অথচ তারা তা না করে রাসুলুল্লাহর সুন্নাহর বিরোধীতা করছে। যদি তারা রাসুলুল্লাহর বিরোধীতা করে তাঁর অনুসরণ না করে, তাহলে তারা কীভাবে আল্লাহর ভালোবাসা পাওয়ার দাবি করে?
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ
মোহাম্মাদ ইস্রাফিল হোসাইন। (বিএ ইন আরবি সাহিত্য ও ইসলাম
সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী
২২ জানুয়ারি, ২০২২
পতেঙ্গা, চট্টগ্রাম।