কারা হেদায়েতের উপযুক্ত নয় |
কারা হেদায়েতের উপযুক্ত নয়
আল্লাহ পৃথিবীতে মানুষ সৃষ্টি করেছেন পরীক্ষা করার জন্য। একইসাথে প্রতিটি মানুষকে দিয়েছেন নিজস্ব স্বাধীনতা। যাতে সে তার ইচ্ছামতো চলতে পারে। এই স্বাধীনতা নিয়ে প্রতিটি মানুষই চাইলে ভালো তথা আল্লাহর পথে কিংবা মন্দ তথা শয়তানের পথে চলতে পারে। আর এই ভালো পথে চলার নামই হচ্ছে হেদায়েত। যা একমাত্র আল্লাহ নিজেই তাঁর বান্দাদের দিয়ে থাকেন। তাহলে এই হেদায়েত তথা সৎপথ কারা পেতে পারে?
আল্লাহ কি সরাসরি কোনো মানুষকে হেদায়েত থেকে বঞ্চিত করেন? নাকি মানুষ নিজের কর্মে জ্ঞানে বুদ্ধিতে হেদায়েত থেকে বঞ্চিত হয়। অতএব আজ আমরা দেখবো কোন কোন কাজে এবং কোন কোন শ্রেণীর লোকেরা কী কী কারণে আল্লাহর হেদায়েত থেকে বঞ্চিত হয়।
হেদায়েত মূলত দুই ধরনের। এক হচ্ছে- কাউকে বিধর্মী থেকে ইসালামের পথে আসতে হেদায়েত করা। দুই হচ্ছে- ঈমান আনার পর সঠিক পথে অবিচল থাকার ব্যাপারে হেদায়েত দান করা। এখন আলোচনা করবো আমরা যারা নিজেদের মুসলিম দাবি করছি, তারা মুসলিম হওয়া সত্ত্বেও কীভাবে সঠিক হেদায়েত পায় না।
আরও পড়ুন শিরক কী? মানুষ কীভাবে শিরক করে
১) রাসুল (সা.) এর অনুসরণ না করা
একজন ঈমানদার তখনই সঠিক হেদায়েত প্রাপ্ত হবেন, যখন তিনি রাসুল (সা.) এর আদর্শের অনুসারী হবেন। অর্থাৎ ঈমান আনার পর যারা যাবতীয় আমল শুধুমাত্র রাসুল (সা.) এর ত্বরিকায় পালন করেন, তারাই হেদায়েত প্রাপ্ত হয়ে সফলকাম হবে। আল্লাহ বলেন,
‘(হে রাসুল! আপনি) বলুন, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাসতে চাও, তবে আমার অনুসরণ কর; তাহলেই আল্লাহ তোমাদের ভালোবাসবেন এবং তোমাদের গোনাহসমূহ ক্ষমা করে দেবেন। আর আল্লাহ হলেন ক্ষমাশীল দয়ালু।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ৩১)
এখানে আল্লাহ সুস্পষ্টভাবে বলেছেন যে, আল্লাহর ভালোবাসা তথা হেদায়েত পেতে চাইলে অবশ্যই রাসুল (সা.) কে ভালোবেসে অনুসরণ এবং অনুকরণ করতে হবে। এখন যদি কেউ রাসুল (সা.) এর সহিহ আকিদা এবং আমল অনুসরণ না করে নিজের মতো বা পূর্বপুরুষদের অন্ধ অনুসরণে চলে তাহলে তারা কখনোই আল্লাহর ভালোবাসা এবং হেদায়েত কিছুই পাবো না। সুতরাং যারা রাসুল (সা.) আদর্শে আদর্শিক নয় তারা কখনোই হেদায়েতপ্রাপ্ত হবে না।
আরও পড়ুন সুফিবাদী সুন্নীদের আকিদা সমূহ
২) দিনের জ্ঞানার্জন না করা ব্যক্তি
যারা ইসলাম সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান রাখে না তারা সহজে আল্লাহর হেদায়েত পায় না। অর্থাৎ আল্লাহ এবং আল্লাহর দিন সম্পর্কে জানার চেষ্টা এবং আগ্রহ না থাকলে সেই ব্যক্তি আল্লাহর হেদায়েত পায় না। আল্লাহ বলেন,
"যারা জানে এবং যারা জানে না; তারা কি সমান হতে পারে? চিন্তা-ভাবনা কেবল তারাই করে, যারা বুদ্ধিমান। (সুরা যুমার ৩৯:৯)
আল্লাহ আরো বলেন,
"যে ব্যক্তি জানে যে, যা কিছু পালনকর্তার পক্ষ থেকে আপনার প্রতি অবর্তীর্ণ হয়েছে তা সত্য সে কি ঐ ব্যক্তির সমান, যে অন্ধ? তারাই বোঝে, যারা বোধশক্তি সম্পন্ন"। (সুরা রা’দ ১৩:১৯)
উপরোক্ত আয়াত দ্বারা আল্লাহ দিনের জ্ঞানার্জনের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছেন। সঠিক জ্ঞান জ্ঞানার্জনের মাধ্যমে সঠিক আকিদা এবং আমল করা একজন মুমিনের কর্তব্য। সুতরাং যারা সঠিক জ্ঞানার্জনের দ্বারা আমল করার চেষ্টা করে না, আল্লাহ তাদের হেদায়েতের রাস্তায় পরিচালিত করেন না। তাই তারা হেদায়েত থেকে বঞ্চিত হয়।
৩) সত্য গ্রহণে বিমুখ
যারা সর্বদা সত্যের অনুসন্ধান করে একমাত্র তারাই সত্যের আলো দেখতে পায়। অর্থাৎ আল্লাহর পক্ষ থেকে যেকোনো সত্য যেকোনো সময় সামনে আসার সাথে সাথে যারা তা মানতে পারে কেবল তাঁরাই হেদায়েতের অধিকারী হয়। অর্থাৎ কোন মানুষের সামনে এমন সত্য এসে উপস্থিত হয়েছে, যা তার অতীতের ঈমান এবং আমলের বিপরীত। এখন সমস্ত দলিলের বিবেচনায় যদি তার আগের ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়, তাহলে যে সত্যাগ্রহী সে সাথে সাথেই সত্যকে মেনে নেয়। আর যে সত্য বিমুখ এবং সত্য গ্রহণে অনাগ্রহী সে কখনোই প্রমাণিত সত্য মেনে নিবে না। আর এরাই আল্লাহর হেদায়েত থেকে বঞ্চিত গোষ্ঠী। আল্লাহ বলেন,
"যে ব্যক্তি আল্লাহর বিরুদ্ধে মিথ্যা বলে এবং তার কাছে সত্য আগমন করার পর তাকে মিথ্যা সাব্যস্ত করে, তার চেয়ে অধিক যালেম আর কে হবে?" (সুুরাঃ আল-যুমার, আয়াতঃ ৩২)
অর্থাৎ যারা প্রমাণিত প্রতিষ্ঠিত সত্যকে মেনে নেয় না, তারা হচ্ছে যালিম। আর যালিম ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে কখনোই আল্লাহ হেদায়েত দেন না। আল্লাহ বলেন, "
আর আল্লাহ যালেম সম্প্রদায়কে হেদায়েত দান করেন না।" (সুুরাঃ আল ইমরান, আয়াতঃ ৮৬)
আরও পড়ুন সুফি সুন্নীদের বিভিন্ন আকিদা সম্পর্কিত জবাব
৪) আল্লাহর উপর ভরসা না থাকা
হেদায়েত না পাওয়ার আরেকটি কারণ হলো আল্লাহর উপর সর্বদা ভরসা না করা। যারা জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে সর্বাবস্থায় আল্লাহর উপর ভরসা রাখে আল্লাহ তাদের অবশ্যই হেদায়েত দেন। জীবনের প্রতিটি উত্থান পতনে সবসময় আল্লাহর উপর ভরসা রাখা হেদায়েত প্রাপ্তির লক্ষণ। আল্লাহ বলেন
, "যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা করে তার জন্যে তিনিই যথেষ্ট। আল্লাহ তার কাজ পূর্ণ করবেন।" ( সুরা তালাক ৬৫:৩ )"
অর্থাৎ যারা আল্লাহর উপর ভরসা রাখে তাদের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট। তিনি তাদের কাজ পরিপূর্ণ করে দেন। সুতরাং আল্লাহর উপর ভরসা না করা ব্যক্তি কখনোই সৎপথ তথা হেদায়েত পায় না।
৫) অসৎ ব্যক্তি
অসৎ ব্যক্তি কখনোই হেদায়েতের উপযুক্ত নয়। যারা ব্যক্তি জীবনে প্রতিটি স্তরে সৎপথ অবলম্বন করে তারা হেদায়েত প্রাপ্ত হয়। যারা সৎ পথে চলে না তাদের আল্লাহ হেদায়েত দান করেন না। আল্লাহ বলেন,
"অতঃপর তাকে তার অসৎকর্ম ও সৎকর্মের জ্ঞান দান করেছেন, যে নিজেকে শুদ্ধ করে (সৎ কর্ম দ্বারা) , সেই সফলকাম হয়। এবং যে নিজেকে কলুষিত (অপকর্মে নিমজ্জিত) করে, সে ব্যর্থ মনোরথ হয়"। ( সুরা শামস ৯১: ৮, ৯, ১০ ) "
সুতরাং যারা নিজেদের জীবনকে অসৎ পথে পরিচালিত করে তারা কখনোই আল্লাহর রহমত তথা হেদায়েত পায় না।
আরও পড়ুন শুধু অলি আউলিয়ারাই আল্লাহর অলি নয়
৬) ফাসেকী ব্যক্তি
হেদায়েত প্রাপ্তির আরেকটি অন্যতম শর্ত হলো ফাসেকি তথা পাপ পরিহার করা। তাই ব্যক্তি জীবনে যারা ফাসেক বা পাপী তারা কখনো হেদায়েত পায় না। আল্লাহ বলেন,
"আর আল্লাহ ফাসেক সম্প্রদায়কে হেদায়েত দেন না"। (সুুরা তওবা ৮০)
অর্থাৎ যারা কুরআন সুন্নাহর বাইরে চলে বিভিন্ন পাপ এবং আমল করে তাদের আল্লাহর সাথে কুফরি করে। আর যারা কুফরি করে তারা ফাসেক। আর এই ফাসেক ব্যক্তি হেদায়েত পায় না। নিয়মিত সালাত আদায় না করাও কুফুরি। (তিরমিজি : ২৬২০; আবু দাউদ : ৪৬৭৮)
৭) হেদায়েতে অটল থাকার দোয়া না করা
পৃথিবীতে সবচাইতে বেশী হেদায়েত প্রাপ্ত ব্যক্তি হলেন নবী রাসুল (আ.) গণ। আল্লাহ প্রতিটি নবী রাসুলদের নিজে হেদায়েত দিয়েছেন। এ সত্ত্বেও নবী রাসুলগণ প্রতিনিয়ত হেদায়েতের পথে অটল থাকার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করেছেন। আমাদের রাসুল (সা.) প্রতিনিয়ত হেদায়েতের দোয়া করতেন এবং সবাইকে এইসব দোয়া পড়তে ও আমল করতে শিক্ষা দিতেন। (মুসলিম : ২৭২৫, তিরমিজি ৩৫২২) সুতরাং যারা হেদায়েতে অটল থাকার জন্য দোয়া করে না, তারা কখনোই আল্লাহর হেদায়েত পায় না।
আরও পড়ুন দলিল ছাড়া পীরতন্ত্রের ভিত্তি- ২(পর্ব -৩)
৮) হেদায়েত পাওয়ার চেষ্টা না করা
আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বারবার উল্লেখ করেছেন যে, ইবলিশ শয়তান মানুষের প্রকাশ্য শত্রু। এই শয়তানের কাজই হচ্ছে মানুষকে বিভ্রান্ত করে আল্লাহর হেদায়েত থেকে দূরে রাখা। তাই যখনই মানুষ হতাশ হয় ব্যর্থ হয় অথবা প্রচুর প্রাচুর্যের দেখা পায়, তখনই শয়তান প্ররোচনা দেয়। কাউকে দুঃখ দেখিয়ে আল্লাহ থেকে দূরে সরিয়ে দেয়। কাউকে প্রাচুর্যের লোভ ক্ষমতা দেখিয়ে হেদায়েতের পথ থেকে দূরে নিয়ে যায়। তাই যারা হেদায়েতের তথা সৎপথে চলার চেষ্টা করে না তারা কখনোই হেদায়েত পায় না। আল্লাহ বলেন,
"যারা আমার পথে সাধনায় আত্মনিয়োগ করে, আমি অবশ্যই তাদেরকে আমার পথে পরিচালিত করব। নিশ্চয় আল্লাহ সৎকর্মপরায়ণদের সাথে আছেন।" (সুরা আনকাবুত ২৯:৬৯)
অর্থাৎ যারা আল্লাহর পথে থাকতে চায় তারা তাদের তিনি নিজেই তাঁর পথে পরিচালিত করেন। আল্লাহ বলেন,
"আর কারো ঈমান আনা হতে পারে না, যতক্ষণ না আল্লাহর হুকুম হয়। পক্ষান্তরে তিনি অপবিত্রতা আরোপ করেন যারা বুদ্ধি প্রয়োগ করে না তাদের উপর"। ( সুরা ইউনুস ১০:১০০ )"
অর্থাৎ হেদায়েতের পথে জ্ঞান বুদ্ধি ইত্যাদি দিয়ে চেষ্টা না করলে হেদায়েত পাওয়া যাবে না। অধিকাংশ মানুষই নিজেদের জ্ঞান বুদ্ধি ইত্যাদি দিয়ে হেদায়েত পাওয়ার চেষ্টা না বলে আল্লাহর সঠিক হেদায়েত থেকে বঞ্চিত হয়।
আরও পড়ুন সুফি সুন্নীদের কুসংস্কার সম্পর্কিত আকিদার জবাব
৯) নিয়মিত আমল না করা
আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নিয়মিত আমল করাও একটি হেদায়েতের শর্ত। যারা সালাতের আমল নিয়মিত করে, এই সালাতের মাধ্যমেও আল্লাহ হেদায়েত দিতে পারেন। প্রতি ওয়াক্ত সালাতে প্রতিটি রাকাতে আমরা সুুরা ফাতেহা পড়ি। যা একটি দোয়াময় সুুরা। এই দোয়াতে রয়েছে হেদায়েতের পথে রাখার জন্য আল্লাহর কাছে আবেদন। আল্লাহ আমাদের শিক্ষা দিচ্ছেন, আমরা যেন প্রতিনিয়তই সালাতে বলি,
(হে আল্লাহ) আমাকে সরল পথে অটল রাখুন।" (সুুরা ফাতিহা, ১:৬)
শুধু সালাত নয়, ইসলামের যাবতীয় ফরজ কার্যাদি যদি নিয়মিত আমল করা না হয় তাহলেও আল্লাহ হেদায়েত থেকে বঞ্চিত করেন। আল্লাহ বলেন,
"অবশ্য যেসব লোক ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে, তাদেরকে হেদায়েত দান করবেন তাদের পালনকর্তা, তাদের ঈমানের মাধ্যমে।" (সুরা: ইউনুস, আয়াত: ৯)
সুতরাং ইমান এনে সৎকাজ না করলে সে ব্যক্তি কখনোই হেদায়েত পায় না।
আরও পড়ুন কুরআনের আলোকে মানুষ সৃষ্টির কারণ
১০) গোমরাহী বা পথভ্রষ্ট হওয়া
গোমরাহ ব্যক্তি কখনোই হেদায়েতের স্বাদ পায় না। গোমরাহী অর্থ হলো পথভ্রষ্ট হওয়া। অর্থাৎ সঠিক পথে না চলে নিজে যা বুঝে সে মতেই চলা বা অটল থাকা। সত্য প্রকাশিত হওয়ার পরও সত্যকে গ্রহণ না করা ইত্যাদি। পূর্বপুরুষদের অন্ধ অনুসরণ বা অধিকাংশের মতকে সত্যের মানদন্ড ধরে সেই মতকেই চিরসত্য মনে করা হচ্ছে গোমরাহী।
গোমরাহী ব্যক্তির ধ্বংসের মূল কারণ হচ্ছে গোয়ারতুমি। এইসব ব্যক্তি কখনোই নিজের মতের বাইরে কিছুই চিন্তা করতে পারে না। যারফলে তারা সত্যকে মেনে নিতে পারে না। আর এই কারণেই তারা হেদায়েতের স্বাদ থেকে দূরে সরে যায়। আল্লাহ বলেন,
"তারা সে সমস্ত লোক, যারা হেদায়েতের বিনিময়ে গোমরাহী খরিদ করে। বস্তুতঃ তারা তাদের এ ব্যবসায় লাভবান হতে পারেনি এবং তারা হেদায়েতও লাভ করতে পারেনি।" (সুরা বাকারা ২:১৬)
সুতরাং গোমরাহী করাটা হেদায়েতের সম্পূর্ণ বিপরীত একটি দিক। অতীতে অসংখ্য জাতি গোষ্ঠী শুধুমাত্র গোমরাহীর কারণে আল্লাহর আযাবে পতিত হয়েছে। যারা গোমরাহী মানসিকতা ধারণ করে আল্লাহ তাদের হেদায়েত দেন না।
আরও পড়ুন তাওহিদ কী কীভাবে আল্লাহর তাওহিদ ক্ষুন্ন হয়
১১) পূর্বপুরুষদের অন্ধ অনুসরণ করা
অতীতের অসংখ্য জাতি গোষ্ঠী শুধুমাত্র পূর্বপুরুষদের অন্ধ অনুসরণের কারণে হেদায়েত প্রাপ্ত হয়নি। কিছু মানুষের বদ্ধমূল ধারণা যে, তাদের বাপ দাদারা যুগ যুগ ধরে যা পালন করে আসছে তার সবই সঠিক। তাদের যুক্তি হলো বাপ দাদারা সঠিক না হলে কেন এইসব এতো যুগ ধরে পালন করে আসছে? যারা সত্য প্রকাশিত হওয়ার পরও তাদের বাপ দাদার আদর্শকেই সত্যের মাপকাঠি ধরে নিয়ে জীবনযাপন করে তারা হেদায়েত থেকে বঞ্চিত হয়। আল্লাহ বলেন,
"যখন তাদেরকে বলা হয় যে, আল্লাহর নাযিলকৃত বিধান এবং রাসুলের দিকে আসো। তখন তারা বলে, আমাদের জন্যে তাই যথেষ্ট, যার উপর আমরা আমাদের বাপ-দাদাকে পেয়েছি। যদি তাদের বাপ দাদারা কোন জ্ঞান না রাখে এবং হেদায়েত প্রাপ্ত না হয় তবুও কি তারা তাই করবে"? ( সুরা মায়েদা ৫:১০৪ )
আল্লাহ আরও বলেন,
"তাদেরকে যখন বলা হয়, আল্লাহ যা নাযিল করেছেন, তোমরা তার অনুসরণ কর, তখন তারা বলে, বরং আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদেরকে যে বিষয়ের উপর পেয়েছি, তারই অনুসরণ করব। শয়তান যদি তাদেরকে জাহান্নামের শাস্তির দিকে দাওয়াত দেয়, তবুও কি"? ( সুরা লুকমান ৩১:২১ )
সুতরাং পূর্বপুরুষের অন্ধ অনুসরণ হেদায়েতের পথে বড় বাঁধা। যারা সত্য উদ্ঘাটিত হওয়ার পরও শুধুমাত্র পূর্বপুরুষদের দোহাই দিয়ে সত্য থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় তারা কখনোই হেদায়েত পায় না।
আরও পড়ুন বিশ্বকাপ ফুটবল এবং আমাদের ঈমান আকিদা
১২) অত্যাচারী হওয়া
অত্যাচারী অসৎ ব্যক্তি কখনোই হেদায়েতের রাস্তা পায় না। নিজের জ্ঞান গরিমা, আত্ম অহংকার বিত্ত বৈভব ক্ষমতা ও প্রাচুর্যের কারণে অনেক ব্যক্তি অত্যাচারী হয়ে উঠে। যখন মানুষ অত্যাচারী হয়ে উঠে তখন তার হিতাহিত জ্ঞান থাকে না। ফলে সে সত্য উপলব্ধি করতে পারে না। আর এই কারণেই আল্লাহ বলেন,
"নিশ্চয় আল্লাহ অত্যাচারী সম্প্রদায়কে পথপ্রদর্শন করেন না।" (সুরা আন’য়াম ৬:১৪৪)
সুতরাং যেসব ব্যক্তি অত্যাচারী তারা কখনোই আল্লাহর হেদায়েতের উপযুক্ত নয়।
১৩) অহংকারী ব্যক্তি
অহংকারী না হওয়া হেদায়েত প্রাপ্তির আরেকটি উল্লেখযোগ্য দিক। যেসব ব্যক্তি অহংকারী তারা কখনোই আল্লাহর হেদায়েত প্রাপ্ত হন না। বংশমর্যাদা অর্থ বৈভব বিত্তশালীতা ইত্যাদি মানুষের অন্তরে হিংসা এবং অহংকারের জন্ম দেয়। এই অহংকারের কারণেই অনেক মানুষ সহজে সত্য গ্রহণ করতে পারে না।
অহংকারী লোক দীর্ঘদিন ধরে কোনো মত ও পথে চলতে থাকার ফলে হঠাৎ সত্যের মুখোমুখি হলে তারা সহজে সত্যকে গ্রহণ করতে পারে না। তাদের অহংকার তাদেরকে সত্য গ্রহণ করতে বাঁধাগ্রস্ত করে। সেইসাথে অহংকার মানুষকে অন্যায়ের দিকে ধাবিত করে। যে কারণে আল্লাহ তাআলা অহংকারী ব্যক্তিকে পছন্দ করেন না। আল্লাহ তাআলা বলেন,
‘নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা কোনো উদ্ধত অহংকারীকে পছন্দ করেন না।’ (সুরা লোকমান : আয়াত ১৮)
অতএব অহংকারী লোকেরা সহজে হেদায়েত প্রাপ্ত হন না।
আরও পড়ুন ঈমান কী? পরিপূর্ণ ঈমানের বিস্তারিত ব্যাখ্যা
১৪) বিদআতী আমল আকিদা
ইসলামি সুস্পষ্ট নীতিমালার বাইরে গিয়ে অনেক লোক বিদআতের অনুসরণে জড়িয়ে পড়ে। যারা জেনেশুনে বিদআতে জড়িয়ে যায় তাদের আল্লাহ সহজে হেদায়েতের রাস্তা দেখান না। বিদআত নিয়ে রাসুল (সা.) বলেন,
‘নিশ্চয়ই শ্রেষ্ঠ বাণী হলো আল্লাহর কিতাব এবং শ্রেষ্ঠ হেদায়াত হলো মুহাম্মাদের হেদায়াত। আর নিকৃষ্টতম কাজ হলো দিনের মধ্যে নতুন সৃষ্টি এবং প্রত্যেক নতুন সৃষ্টিই হলো ভ্রষ্টতা’ (মুসলিম, মিশকাত হা/১৪১)। আর নাসাঈতে রয়েছে, ‘প্রত্যেক ভ্রষ্টতার পরিণতি জাহান্নাম’ (নাসাঈ হা/১৫৭৮)।
সুতরাং যারা বিদআতী আকিদা ও আমল করে তারা কখনোই হেদায়েত পায় না।
১৫) প্রবৃত্তির অনুসরণ করা
মানুষ মাত্রই প্রবৃত্তির অনুসারী। আল্লাহ মানুষকে ব্যক্তি স্বাধীনতা দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। ফলে সে নিজের খেয়ালখুশি মতো চলতে পারে। এই প্রবৃত্তির অনুসারী ব্যক্তিরা সহজে হেদায়েতের আলো পায় না। কেননা তাদের যা বলা হয় তারা তা করতে ইচ্ছুক নয়। তারা তাদের মন মতো ইবাদত আমল করতে আগ্রহী। যারা নিজেদের খেয়ালখুশিমতো চলে তাদের আল্লাহ হেদায়েত দেন না। আল্লাহ বলেন,
"অতঃপর তারা যদি আপনার কথায় সাড়া না দেয়, তবে জানবেন, তারা শুধু নিজের প্রবৃত্তির অনুসরণ করে। আল্লাহর হেদায়েতের পরিবর্তে যে ব্যক্তি নিজ প্রবৃত্তির অনুসরণ করে, তার চাইতে অধিক পথভ্রষ্ট আর কে? নিশ্চয় আল্লাহ জালেম সম্প্রদায়কে পথ দেখান না।" (সুরা কাসাস ২৮:৫০)
আরও পড়ুন সুফি সুন্নীরা শয়তানের অলি
১৬) অধিকাংশের অনুসরণ করা
আল্লাহ পবিত্র কুরআনে অসংখ্য আয়াতে অধিকাংশ মানুষের অনুসরণ করতে নিষেধ এবং নিরুৎসাহিত করেছেন। কেননা অধিকাংশ মানুষ যা করে তা সবসময়ই সঠিক হবে এমন নয়। অধিকাংশ মানুষ যা করছে তা সহি শুদ্ধ এবং প্রমাণিত সত্য না হলে তা অনুসরণ করা যাবে না। দল ভারী হলেই যে সেই দল সত্য তা কিন্তু নয়। এব্যাপারে আল্লাহ বিভিন্ন আয়াত নাযিল করেছেন। আল্লাহ বলেন,
অধিকাংশেরই বিবেক বুদ্ধি নেই। (৫/১০৩) অধিকাংশই জানে না। (৬/৩৭) অধিকাংশই মূর্খ। (৬/১১১) আর তাদের অধিকাংশ লোককেই আমি প্রতিজ্ঞা বাস্তবায়নকারীরূপে পাইনি; বরং তাদের অধিকাংশকে পেয়েছি হুকুম অমান্যকারী। (৭/১০২) অধিকাংশ সত্যকে অপছন্দ করে। (২৩/৭০) অধিকাংশই বিশ্বাসী নয়। (২৬/ ৮) অধিকাংশই মিথ্যাবাদী। (২৬/ ২২৩)
উপরোক্ত আয়াত ছাড়াও আরো অসংখ্য আয়াতে আল্লাহ অধিকাংশ মানুষের বিরোধীতা করেছেন। অর্থাৎ অধিকাংশের মতো সবসময় ঠিক নয়। অধিকাংশের মতের উপর জীবনযাপন করাটা হচ্ছে হেদায়েত বঞ্চিত হওয়ার লক্ষণ। যারা নিজের বিবেক বুদ্ধি কাজে না লাগিয়ে অধিকাংশ মানুষের মতের সাথে নিজেকে একাত্ম ঘোষণা করে তারা কখনো হেদায়েতের রাস্তা পায় না।
আরও পড়ুন সুফি সুন্নীদের তাবিজ সম্পর্কিত আকিদার জবাব
১৭) সামাজিক অনুসরণ করা
অন্ধ অনুসরণের মতো সামাজিক অনুসরণও মানুষকে আল্লাহর হেদায়েত থেকে দূরে রাখে। অর্থাৎ কিছু কিছু সামাজিক বিষয় আছে যা ইসলাম বিরোধী। অথচ এইসব আচার অনুষ্ঠান পালন না করলে সমাজের মানুষ খারাপ বলবে। এইসব বিষয়ে সঠিক সত্য জানার পরও পরিহার না করে সামাজিক চাপে তা পালন করা এবং চালিয়ে যাওয়াও হেদায়েতের পথে অন্তরায়।
সঠিক ঈমান আমল জানার পরও শুধুমাত্র সামাজিক সম্মান মান মর্যাদা ইত্যাদির কারণে সত্যকে প্রকাশ না করা এবং সত্যকে গ্রহণ না করাও হেদায়েত প্রাপ্তির বাঁধা। আমাদের সমাজে মানুষের জন্ম মৃত্যু নিয়ে এমন এমন আচার অনুষ্ঠান আছে যা ইসলাম সম্মত নয়। তবুও আমরা অধিকাংশ মানুষ এইসব আচার অনুষ্ঠান মেনে নিচ্ছি শুধুমাত্র সামাজিক কারণে।
সামাজিক কারণটা হচ্ছে অনেকটা সমাজের নেতাদের অনুসরণ। আমরা সমাজে আজ ইসলামের অনুসরণের চাইতে দুনিয়াবী নেতা নেতৃত্বের অনুসরণ করছি বেশী। এইসব অনুসরণ আমাদের হেদায়েতের পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। নেতৃত্বের অনুসরণে আজ আমরা নিজেদের ধর্মহীনতায় নামিয়ে এনেছি। আল্লাহ এই বিষয়ে বলেন,
"তারা (পাপী জাহান্নামীরা) আরও বলবে, হে আমাদের পালনকর্তা, আমরা আমাদের নেতা ও বড়দের কথা মেনেছিলাম, অতঃপর তারা আমাদের পথভ্রষ্ট করেছিল। ( সুরা আহযাব ৩৩:৬৭ )
সুতরাং সামাজিক অনুসরণ এবং দুনিয়াবী নেতৃত্বের অনুসরণ হেদায়েতের অন্তরায়। যারা দুনিয়াবী অনুসরণে মত্ত থাকে আল্লাহ তাদের হেদায়েত দেন না।
আরও পড়ুনরাসুল সাঃ ও পীর অলি আউলিয়া সম্পর্কিত আকিদার জবাব
১৮) অন্তরের বক্রতা
অন্তরের বক্রতা হলো এমন একটি কাজ যা মানুষের মনে যেকোনো সত্য বিষয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করে, যেকোনো কাজে খুঁত ধরে, সত্য প্রমাণিত হওয়ার পরও বারংবার প্রশ্নবিদ্ধ করে। অর্থাৎ সহজ সরল বিষয়কে জেনে বুঝে ইচ্ছাকৃত ভাবে জটিল করে তোলা। এবং সত্য স্বীকারে অস্বীকার করা। আল্লাহ বলেন,
"স্মরণ কর, যখন মূসা (আ:) তাঁর সম্প্রদায়কে বললঃ হে আমার সম্প্রদায়, তোমরা কেন আমাকে কষ্ট দাও, অথচ তোমরা জান যে, আমি তোমাদের কাছে আল্লাহর রাসুল। অতঃপর তারা যখন বক্রতা অবলম্বন করল, তখন আল্লাহ তাদের অন্তরকে বক্র করে দিলেন। আল্লাহ পাপাচারী সম্প্রদায়কে পথপ্রদর্শন করেন না।" (সুরা সফ ৬১:৫)
অন্তরের বক্রতার আরেকটি দিক হলো, সহজ সরল বিষয় অন্বেষণ না করে জটিল ও কুটিল বিষয় অন্বেষণ এবং অনুসরণ করা। যেমন আল্লাহ বলেন,
"তিনিই আপনার প্রতি কিতাব নাযিল করেছেন। তাতে কিছু আয়াত রয়েছে সুস্পষ্ট, সেগুলোই কিতাবের আসল অংশ। আর অন্যগুলো রূপক। সুতরাং যাদের অন্তরে কুটিলতা রয়েছে, তারা অনুসরণ করে ফিৎনা বিস্তার এবং অপব্যাখ্যার উদ্দেশে তন্মধ্যেকার রূপকগুলোর।" (সুরা ইমরান ৩:৭)
সুতরাং অন্তরের বক্রতা হেদায়েতের পথে বড় প্রতিবন্ধক। যারা এই রোগে আক্রান্ত হয় আল্লাহ তাদের রোগ আরো বাড়িয়ে দেন। আল্লাহতাআলা বলেন,
"কিন্তু তারা যখন বাঁকা পথ ধরল, তখন আল্লাহও তাদের অন্তরকে বাঁকা করে দিলেন।" (সুুরা আছ-ছফ, ৬১:৫)
সুতরাং অন্তরের বক্রতাসম্পন্ন ব্যক্তি হেদায়েত পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়।
আরও পড়ুন সুফি সুন্নীদের বিভিন্ন আকিদা সম্পর্কিত জবাব
১৮) কুরআনকে না জানা
আল্লাহর হেদায়েতের সর্বোচ্চ এবং সর্বোত্তম উৎস হলো পবিত্র কুরআন। যারা সঠিকভাবে কুরআন বুঝার এবং জানার চেষ্টা করে তাঁরাই হেদায়েতের পথে থাকে। দিনের যেকোনো বিষয়ে জানতে হলে সর্বপ্রথম কুরআনের কাছে যেতে হবে। অর্থাৎ আল্লাহর কুরআন যিনি যতবেশী জানবেন তিনি ততবেশী হেদায়েতের পথে থাকবেন। আল্লাহ বলেন,
"হে রাসুল (সা.) আমি আপনার প্রতি গ্রন্থ (কুরআন) নাযিল করেছি যেটি এমন যে তা প্রত্যেক বস্তুর সুস্পষ্ট বর্ণনা, হেদায়েত, রহমত এবং মুসলমানদের জন্যে সুসংবাদ।" (সুরা নাহল ১৬:৮৯)
সুতরাং কুরআন হচ্ছে হেদায়েতের মাধ্যম। আল্লাহ আরো বলেন,
"এই কোরআন এমন পথ প্রদর্শন করে, যা সর্বাধিক সরল এবং সৎকর্ম পরায়ণ মুমিনদেরকে সুসংবাদ দেয় যে, তাদের জন্যে মহা পুরস্কার রয়েছে।" (সুরা বনী-ইসরাঈল ১৭:৯)
অতএব যে ব্যক্তি যতবেশী কুরআনের সংস্পর্শে থাকবে সেই ব্যক্তি ততবেশী হেদায়েতের রাস্তায় থাকবে। যাদের কুরআনের জ্ঞান থাকে না তারা কখনোই আল্লাহর হেদায়েত পায় না।
আরও পড়ুন সুফি সুন্নীদের সাহাবী সম্পর্কিত আকিদার জবাব
১৯) আল্লাহর স্বরণ না থাকা
সর্বাবস্থায় আল্লাহর স্বরণে থাকাটা হেদায়েতের লক্ষণ। অর্থাৎ জীবনযাপনের প্রতিটি সময় আল্লাহর স্বরণ থেকে গাফেল না হওয়া হচ্ছে হেদায়েতে থাকা। যে বা যারা আল্লাহর স্বরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় আল্লাহ তাদের হেদায়েত করেন না। আল্লাহ বলেন,
"যে ব্যক্তি দয়াময় আল্লাহর স্মরণ থেকে চোখ ফিরিয়ে নেয়, আমি তার জন্যে এক শয়তান নিয়োজিত করে দেই, অতঃপর সে-ই হয় তার সঙ্গী।" (সুরা যূখরুফ ৪৩:৩৬ )
অর্থাৎ কেউ আল্লাহ থেকে দূরে সরে গেলে তার জন্য আল্লাহ নিজেই একজন শয়তান নিয়োগ করেন। যাতে সেই শয়তান তাকে পথভ্রষ্ট করে হেদায়েত থেকে দূরে রাখতে পারে। শুধু তাইনয় এই শয়তান সেই আল্লাহ বিমুখ বান্দাকে দিয়ে এমন সব কাজ করিয়ে নেয় যা আল্লাহর বিধানের বিপরীত। অথচ সে মনে করে সে ভালো কাজই করছে। এব্যাপারে আল্লাহ বলেন,
"শয়তানরাই মানুষকে সৎপথে বাধা দান করে, আর মানুষ মনে করে যে, তারা সৎপথে রয়েছে।" (সুরা যূখরুফ ৪৩:৩৭)
সুতরাং আল্লাহ থেকে গাফেল ব্যক্তি হেদায়েতের উপযুক্ত নয়।
আরও পড়ুন দলিল ছাড়া পীরতন্ত্রের ভিত্তি- ১ (পর্ব -২)
উপরোক্ত আলোচনা থেকে আমরা বুঝতে পারলাম ইসলাম সহজ সরল একটি জীবনবিধান। যারা নিজেদের সৎ সরল এবং সত্য পথে পরিচালিত করবে কেবলমাত্র তাঁরাই আল্লাহর হেদায়েত প্রাপ্ত হবে। আর যারা নিজেদের খেয়ালখুশি মতো চলবে, অসৎ পথ অবলম্বন করবে, পাপাচারী হবে, সত্য বিমুখ হবে, দুনিয়াবী নেতা নেত্রীর অনুসারী হবে, পূর্বপুরুষদের অন্ধ অনুসরণ করবে, নিজের জ্ঞানকে কাজে না লাগিয়ে অধিকাংশ মানুষের অনুসরণে জীবনযাপন করবে, তাদের আল্লাহ সহজে হেদায়েতের রাস্তা দেখান না। এইসব মানুষ হেদায়েতের উপযুক্ত নয়।
সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী
১৫ অক্টোবর, ২০২১ ইংরেজী
পতেঙ্গা, চট্টগ্রাম।
কৃতজ্ঞতা
By "Bangla Quran" App - https://alquranbd.com/AndroidApp